সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সরকার ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশাসহ তিন চাকার সকল যানবাহন বন্ধ করলেও সীতাকুণ্ড অংশে থেমে নেই সড়ক দুর্ঘটনা। গত ১০ দিনে মহাসড়কের এ অংশে দুর্ঘটনায় যুবক, মহিলা ও পথচারীসহ অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন আরো ২৮ জন। সম্প্রতি মহাসড়কে ঘটে যাওয়া ট্রাফিক পুলিশ এসব দুর্ঘটনা চালকের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো এবং ওভারটেক প্রতিযোগিতার কারণে ঘটছে বলে জানিয়েছে । তবে পথচারীসহ সাধারণ লোকজনের অভিযোগ, ট্রাফিক পুলিশের সঠিক নজরদারি না থাকায় নিষিদ্ধ তিন চাকার যানবাহন এখানে চলাচল করায় এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।

জানা যায়, গত ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড সিরাজ ভূইয়া রাস্তার মাথা এলাকায় ঢাকামুখী যাত্রীবাহী একটি বাসের চাপায় অজ্ঞাত (৭৫) এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। একই ভাবে ৭ সেপ্টেম্বর রাত দেড়টায় উপজেলার পৌরসদরস্থ উত্তর বাইপাস এলাকায় প্রাইভেট কার চাপায় মো. এরশাদ (২৭) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। রাতে বন্ধুর বাড়ি থেকে ফেরার সময় পৌরসদরের উত্তর বাইপাস এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় ঢাকামুখী একটি প্রাইভেট কার এরশাদকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এছাড়া ৮ সেপ্টেম্বর বিকালে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাড়বকুণ্ড বাজার এলাকায় লরিচাপায় অজ্ঞাত (২৫ বছরের) এক যুবকের মৃত্যু হয়। পরদিন ৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামমুখী যাত্রীবাহী একটি বাস মহাসড়কের বাঁশবাড়িয়া এলাকা অতিক্রমকালে ওভারটেক করতে গিয়ে একইমুখী পণ্যবাহী একটি লরিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের সামনের অংশ ধুমড়ে–মুচড়ে ২৮ জন যাত্রী গুরুতর আহত হন। এছাড়া গত ১২ সেপ্টেম্বর সীতাকুণ্ড মেডিকেল গেট এলাকায় পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যান চাপায় মো. আলাউদ্দিন (৩৫) নামে মাছ আড়তের এক কর্মচারী নিহত হন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে মহাসড়কের কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনে চট্টগ্রামমুখী একটি বাসের চাপায় অজ্ঞাত (৩৫) এক মহিলা গুরুতর আহত হন। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ভোরে তার মৃত্যু হয়।

সীতাকুণ্ড সমিতির সভাপতি লায়ন মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘ট্রাফিক পুলিশের উদাসীনতা ও সঠিক নজরদারির অভাবে মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়া সিএনজি অটোরিকশাসহ তিনচাকার যানবাহন বন্ধের সুবাধে মহাসড়ক অনেকটা ফাঁকা থাকায় চালকরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে মারাত্মক এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে অকালে ঝরে পড়ছে অনেক তাজা প্রাণ। এছাড়া হাত–পাসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ–প্রত্যঙ্গ হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে অনেককে।’

রার আউলিয়া হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট জীবন হাজারি বলেন, ‘চালকের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ও ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেক এবং ফিটনেসহীন গাড়ির কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কে ফিটনেসহীন গাড়ি বন্ধ ও রাস্তার ঝুঁকিপূর্ণ অংশে ডিভাইডার স্থাপনের মাধ্যমে এসব দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।’

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031