রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আগের মতোই অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ কিছুটা কমলেও শাহপরীরদ্বীপে । বরং আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। টেকনাফ বাস স্টেশন এলাকায় গত কয়েকদিন যেভাবে রোহিঙ্গাদের ভীড় দেখা যেত সোমবার তার তুলনায় কিছুটা কম দেখা গেছে। বিভিন্ন এলাকায় খবর নিয়ে ও সরেজমিন পরিদর্শনে এ তথ্য জানা গেছে।
পালিয়ে আসা মিয়ানমারের মংডু ধামনখালী এলাকার আব্দুস সালাম ও মোঃ সলিম জানান, মংডুর দক্ষিণে রাখাইনের নাইক্ষংদিয়া এলাকায় এখনও ৭০ হাজার মতো রোহিঙ্গা এপারে আসার অপেক্ষায় রয়েছে।
সীমান্ত অতিক্রম করে আসা রোহিঙ্গাদের বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে। রোববার টেকনাফ বাস স্টেশনে জড়ো হওয়া হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের বিজিবির তত্বাবধানে বিভিন্ন যানবাহনে করে বালুখালী এলাকায় পাঠাতে দেখা গেছে। শুক্রবার থেকে প্রশাসনিক সহযোগীতায় রোহিঙ্গাদের সেখানে পাঠানো শুরু হয়েছে।
যুবলীগ নেতা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য রেজাউল করিম রেজু মেম্বার বলেন সোমবার ১১ সেপ্টেম্বর পুরো শাহপরীরদ্বীপে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। এতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিতে এবং শাহপরীরদ্বীপে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের যারা আশ্রয় দিয়েছেন তাদেরকে ২ দিনের মধ্যে সরকারী নির্ধারিত ক্যাম্পে পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে।
অগ্নি সংযোগ অব্যাহত : রবিবার ও সোমবার ১০-১১ সেপ্টেম্বর টেকনাফ সীমান্তের কাছে রাখাইনের বেশ কয়েকটি গ্রামে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।
টেকনাফ দমদমিয়া এলাকার বাসিন্দা ছালেহ আহমদ জানান, রাখাইনের পেরামপুরু ও রইংগাদংসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। সারাদিন ধরে জ্বলা আগুনের লেলিহান শিখা ও ধোয়ার কুন্ডুলী দেখা গেছে দমদমিয়া ও কেরুনতলী সীমান্ত এলাকা থেকে।
ত্রাণ তৎপরতা : সীমান্ত অতিক্রম করে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরাদের একটা অংশ প্রথমে টেকনাফ বাস স্টেশন এলাকায় অবস্থান নেন। পরে সেখান থেকে উখিয়ার বালুখালী, কুতুপালং, টেকনাফের লেদা, নয়াপাড়া, ও নতুন গড়ে উঠা হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্যং এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রতিদিন নতুন করে সীমান্ত অতিক্রম করে আসা টেকনাফ বাস স্টেশন এলাকায় অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গাদের ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক, সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে শুকনো খাবার, কাপড়, ঔষধ ও নগদ টাকা সহায়তা করতে দেখা গেছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন সিদ্দিক জানান, বালুখালী এলাকায় স্থাপিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জন্য সরকার দুই হাজার একর জমি বরাদ্দ দিয়েছে। সীমান্ত দিয়ে আগত রোহিঙ্গাদের সেখানে পাঠানো হচ্ছে। তিনি আরো জানান, গ্রামে গঞ্জে কোথাও যাতে রোহিঙ্গারা বিক্ষিপ্ত ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে না পারে সে ব্যাপারে জনপ্রতিনিধি ও বিজিবি পুলিশ কোস্টগার্ডকে অবহিত করা হয়েছে। টেকনাফে এখনও সরকারীভাবে ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়নি।তবে শীগ্রই সরকারীভাবে ত্রাণ বিতরন শুরু হবে। বেসরকারীভাবে যারা ত্রাণ বিতরন করছেন তারা ব্যক্তিগত ভাবেই বিতরন করছেন। শনিবার ৯ সেপ্টেম্বর একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান প্রশাসনকে অবহিত করে ত্রাণ বিতরণ করেন। এছাড়া লেদা আনরেজিস্টার্ড ক্যাম্পে নতুন আসা রোহিঙ্গাদের মাঝে বেসরকারী ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ সহায়তা করা হচ্ছে।