আজ ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ পবিত্র হজ পালিত হবে। সৌদি আরবের মক্কা নগরীর ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দানে আজ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান। ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে আজ সারাদিন মুখর থাকবে আরাফাতের ময়দান।
পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে গতকাল বুধবার থেকে। আজ ফজরের নামাজ আদায়ের পর মিনা থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে যাত্রা করবেন হাজিরা। আরাফাতের ময়দানে পবিত্র হজের ইমাম খুতবা পাঠ করবেন। আরাফাতের ময়দানে অবস্থানই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা।
আজ সূর্যাস্থের পর আরাফাত থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় গিয়ে রাত্রিযাপন করবেন হজযাত্রীরা। সেখানে মিনায় জামারতের শয়তানকে মারার জন্য তাঁরা পাথর সংগ্রহ করবেন। ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরবেন তাঁরা। এখানে বড় শয়তানকে পাথর মেরে, কোরবানি করে মাথা মুণ্ডন করতে হবে। পরে কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন তাঁরা। পরে মিনায় ফিরে ১১ ও ১২ জিলহজ সেখানে অবস্থান করবেন তাঁরা। সেখানে প্রতিদিন তিন শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন মুসলমানরা।
এ বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২০ লাখের বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমান মক্কায় হজ করতে গেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে হজ করতে গেছেন এক লাখ ২৭ হাজারের কিছু বেশি।
হজ উপলক্ষে এবার মক্কায় কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মিনায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের সময় যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য ভাগ ভাগ করে মুসলমানদের সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ। ২০১৫ সালে মিনায় পাথর নিক্ষেপের সময় পদদলিত হয়ে এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
মক্কায় দ্রুত ভিড় অপসারণ এবং যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হজ পালন করতে যাওয়া ব্যক্তিদের পথ চলা ও দিক নির্দেশনার জন্য প্রায় পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হজের অনুমতি না থাকা কোনো ব্যক্তি যেন মক্কায় প্রবেশ করতে না পারে এজন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্বাস্থ্যসেবার জন্য মক্কায় পর্যাপ্ত জনবল, ওষুধ ও যন্ত্রপাতিসহ আটটি হাসপাতাল চালু আছে। এ ছাড়া মিনা, আরফাতের ময়দান ও মুজদালিফায ২৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।