মিয়ানমারের রাখাইনে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি ঘটনা পরবর্তী সহিংসতায় দেশটির হাজার হাজার নিরস্ত্র
নাগরিকের বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টার কড়া প্রতিবাদ করেছে ঢাকা। ঢাকাস্থ মিয়ানমার দূত অং মিন্টকে শনিবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। মিয়ানমার দূতকে তলবের বিষয়টি পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক মানবজমিনকে নিশ্চিত করেন। এদিকে সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৫শে আগস্ট রাখাইনে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের ওপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে নতুন করে যে সহিংসতা শুরু হয়েছে, তা আমলে নিয়েছে বাংলাদেশ। মিয়ানমার ফোর্সের ওপর এমন হামলার নিন্দা জানায় বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন রাখাইনের রাথিডং-বুথিডং এলাকায় মিয়ানমারের নতুন করে সেনা মোতায়েনের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট সহিংসতায় নিরীহ লোকজনের প্রাণহানির ঘটনায়। মিয়ানমার দূতকে তলবের বিষয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- গতকাল বিকালে ঢাকাস্থ মিয়ানমারের চার্জ দ্য এফেয়ার্স পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (এশিয়া ও প্যাসিফিক) মাহবুব উজ্ জামানের সঙ্গে দেখা করেন (তলবের পরিপ্রেক্ষিতে)। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সেই সাক্ষাৎ-বৈঠকে রাখাইন রাজ্যের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তারা আলোচনা করেন। গত বছরের ৯ই অক্টোবর মিয়ানমার পুলিশের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর সেখানে একই রকম সেনা অভিযান (মিলিটারি অপারেশন) হয়েছিল, যাতে প্রায় ৮৫ হাজার মিয়ানমার নাগরিক বাংলাদেশে ঢুকেছে উল্লেখ করে সচিব মিয়ানমার দূতকে বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে রাখাইনের নারী, শিশু, বয়োজ্যেষ্ঠসহ হাজার হাজার নিরস্ত্র নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টায় সীমান্তে জড়ো হয়েছে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। সচিব বলেন, এমনিতেই বাংলাদেশ বছরের পর বছর ধরে কয়েক লাখ মিয়ানমার নাগরিককে বয়ে চলেছে। যারা বিভিন্ন ঘটনায় প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ মনে করে মিয়ানমারের সাধারণ নাগরিকদের রক্ষায় রাষ্ট্রের দায়িত্ব নেয়া জরুরি। নিরস্ত্র নাগরিক, বিশেষত চরম ঝুঁকিতে থাকা সেসব নারী, শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠদের উপযুক্ত নিরাপত্তা এবং আশ্রয় নিশ্চিত করতে দেশটির কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায় বাংলাদেশ। সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জিরো নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের ধারাবাহিকভাবে সব রকম সহায়তার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করা হয়। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে মিয়ানমার নাগরিকদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যবস্থা নিতে দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দূতের হাতে একটি অনানুষ্ঠানিকপত্রও হস্তান্তর করেছে ঢাকা। এ নিয়ে সমপ্রতি প্রকাশিত আনান কমিশনের রিপোর্ট বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়া এবং তাদের স্বাধীনভাবে চলাফেরার পরিবেশ নিশ্চিত করার যে সুপারিশ করা হয়েছে তা বাস্তবায়নেরও তাগিদ দিয়েছে ঢাকা। উল্লেখ্য, রাখাইনে নতুন করে সহিংসতা শুরু হলে বাংলাদেশের দিকে ঢল নামে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের। সীমান্তে বিজিবির কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও কক্সবাজারের সীমান্ত দিয়ে দলে দলে অনুপ্রবেশ করছে তারা। তাদের অনেকেই গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর আহত অবস্থায় বাংলাদেশে ঢুকেছে। শনিবারই চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ এক রোহিঙ্গা মারা যান।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | ||||||
2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
30 | 31 |