পথে ঘাটে, বাসে ট্রেনে দেখা হলে অনেকেই ঘৃণা ভরে এড়িয়ে চলেন তাদের।‘হিজড়া’ শব্দটা মনে হলেই অনেকের মনেই আতঙ্ক কাজ করে। যদিও রাষ্ট্র তৃতীয়লিঙ্গের সম্মান দিয়েছে, কিন্তু সমাজের মানুষের কাছে এখনো তাদের অবস্থান খুব একটা গ্রহনযোগ্যতার জায়গায় নেই। অথচ আমাদের জানার সীমানার বাইরে বহু ‘হিজড়া’ সমাজের মানুষের জন্য নীরবে নিভৃতে অনেক ভালো কাজ করে যাচ্ছেন, যাদের কথা খুব একটা শোনার সময় আমাদের হয় না।
২৬ শে জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভায় হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে একটি গেজেটে প্রকাশ করে। এই ঘোষণার পর বাংলাদেশ থেকে এবারই প্রথমবারের মত পাঁচ জন হিজড়ার একটি দল হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন। বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এই পাঁচজন হিজড়া সোমবার হজ পালনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এ সৌদির উদ্দেশে যাত্রা করেছেন।
বিমানবন্দরের একজন কর্মকর্তা বলেন- ‘গাজীপুর থেকে আসা এই হিজড়াদের দল রাত ২ টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের অভিবাসান চেক পয়েন্ট অতিক্রম করেন।’তিনি বলেন, ‘আমি এই প্রথম হিজড়া হজ যাত্রী দেখলাম। পরে তাদের ফাইল পড়ে দেখলাম উনার নাম কাকলী হিজড়া, গাজীপুর থেকে এসেছেন। আমার সবার নাম মনে নাই কিন্তু দ্বিতীয়জনের নাম ছিল নুরুজ্জামান। আর তাদের সবার পরনে ছিল হজের পোশাক’।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়েছে তারা নিশ্চিত নন এ বছর কোন হিজড়া হজ পালন করছে কিনা। মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (হজ) হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘এটা খুবই অস্বাভাবিক। আমি কখনও এরকম কিছু শুনিনি।’
সাবেক হজ পরিচালক বজলুল হক বিশ্বাস ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে অর্থাৎ ২০০৭ থেকে ২০১৩ সালের ভেতর কখনো কোন হিজড়াকে হজ পালনের জন্য আবেদন করতে দেখিনি। তবে এটা সত্যি যে হিজড়াদের হজ পালন করতে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই।’
যদিও সৌদি আরব ২০১৬ সালের নভেম্বরে হিজড়াদের উমরাহ এবং হজ পালনের উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তাই শেষ পর্যন্ত এই পাঁচজন মানুষের হজব্রত পূর্ন হয় কিনা সেটাই দেখার বিষয়।