দিন যাচ্ছে দুর্ভোগ বাড়ছে।কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের পানি কমতে শুরু করলেও কমেনি বানভাসীদের দুর্ভোগ। গত কয়েকদিন ধরে লড়াই করে যাচ্ছে ২শতাধিক গ্রামের পানিবন্দি প্রায় দেড় লাখ অসহায় মানুষ। টানা পানিবন্দি থাকায় বিপাকে পড়েছে নারী, শিশু, বৃদ্ধরা। দেখা দিয়েছে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি ও গো-খাদ্যের চরম সংকট। বিশাল জনগোষ্টির মাঝে সরকারি ভাবে মাত্র ৩৭০শ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১৬৯ মে. টন চাল ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরন করা হলেও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। অপর দিকে ত্রাণ অপ্রতুল হওয়ায় সবার ভাগ্যে জুটছে না ত্রাণের চাল। ত্রাণের জন্য চারদিকে হাহাকার চলছে। জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছে ত্রাণের আশায়। এমনকি প্রশাসন এবং বিভিন্ন ব্যাক্তি বা সংস্থার পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরন করতে গেলেও শতশত মানুষকে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। আমন ক্ষেত, বীজতলা, সাকসবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছে। পানিবাহিত রোগ দেখা দেয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগ বন্যা দুর্গত এলাকায় এখন পর্যন্ত মেডিকেল টিমও পাঠাননি বলে অভিযোগ করেন পানিবন্দি মানুষজন। আবার অনেকে বলেন মেডিকেল টিম আসলেও ২/৪ মিনিট অপেক্ষা এরপর ছবি উঠানো তারপর শেষ। এদিকে পানি নেমে না যাওয়ায় উপজেলার ৭৫টি প্রাথমিক, ১৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১১টি মাদ্রাসা ও ৪টি কলেজের পাঠদান বন্দ ঘোশনা করেছেন কতৃপক্ষ। প্রায় ১৮টি বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে পানিবন্দি মানুষজন। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ২০ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন বাঁধ, সড়ক ভেঙ্গে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বন্যার্ত মানুষের দুঃখ-দুর্দশা চিত্র। পাত্রখাতা বাঁধের রাহেনা, রানীগঞ্জের , পুটিমারী ঠগের হাট এলাকার মল্লিকা, ওমিচা, ফকিরেরহাট কেচি রাস্তা এলাকার জাহানারাসহ বিভিন্ন এলাকার পানিবন্দি মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে তারা গত কয়েকদিন ধরে বাড়িতে বুক ও কোমর পানি। কেউ পানির মধ্যে চৌকি, মাচা ও নৌকার উপর আবার কেউ কেচি সড়ক, বাঁধের রাস্তায় পুরো পরিবার নিয়ে দিন-রাত কাটাচ্ছে। পূর্ব প্রস্তুতি না থাকায় খাদ্য সংকটে অনাহারে থাকতে হচ্ছে দিনমজুর পরিবারগুলোকে। বন্যায় রান্না করতে অসুবিধা হওয়ায় যাদের সামর্থ্য আছে তারা একবেলা রান্না করে অন্য বেলা শুকনা খাবার খাচ্ছে। যাদের সামর্থ্য নাই তারা পরিবার পরিজন নিয়ে আছেন বিপদে। পকেটে নেই টাকা, হাড়িতে নেই চাল; এই চলছে তাদের দিন কাল। গ্রামের নলকূপগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় পানিবন্দি মানুষজন নদ-নদীর পানি পান করছে। উপজেলা সদর ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার চর-দ্বীপচরের বাড়ির প্রতিটি বাড়িতে এখন হাটু, কোমর থেকে বুক পানি। চরম খাদ্য কষ্টে পড়েছে পানিবন্দি মনতোলা, চরখরখরিয়া, ফেচকা, বহরেরভিটা, মাছাবান্দা, উত্তর ও দক্ষিন খাউরিয়া, রমনাঘাট, ব্যাপারীপাড়াসহ একাধিক এলাকার মানুষ। এসব এলাকায় মানুষের সাথে সাথে গবাদি পশুর খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি মানুষের দূর্ভোগের কথা শিকার করে উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীর বিক্রম বলেন, বানভাসী মানুষের পাশে সরকার আছে এবং তাদের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানো হচ্ছে। সব সময় তাদের খবরও নেয়া হচ্ছে। আশা করছি সমস্যা হবে না।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | ||||||
2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
30 | 31 |