বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরদুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে বলে অভিযোগ করে । দুদক চেয়ারম্যানের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জি কালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যা্লয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
গত বৃহস্পতিবার দুদক চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানান তাদের আইনজীবীরা মামলা পরিচালনায় বাধা পাচ্ছেন। ওই সময় কারো নাম উল্লেখ না করলেও তিনি খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের দিকে ইঙ্গিত করেন বলে সংবাদমাধ্যমে আসে। দুদক বলেন, ‘আমাদের আইনজীবী ও ডিজি আজকে বলছেন, আমাদের কোনো কোনো মামলায় দেখা যাচ্ছে যে অহেতুক সময় চাওয়া হচ্ছে। পরিবেশ অনেক সময়…এমন হয় যে, মামলাটা পরিচালনাই করতে পারছেন না।’
দুদক চেয়ারম্যানের এই বক্তব্য খালেদা জিয়ার মামলার বিচারকে প্রভাবিত করবে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘একটি বিচারাধীন বিষয় নিয়ে তিনি (দুদক চেয়ারম্যান) যেভাবে কথা বলছেন, সেটি তিনি করতে পারেন না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুদক চেয়ারম্যান যে বক্তব্য দিয়েছেন এটা শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়। তার এই বক্তব্য সরকারের বক্তব্য। প্রমাণ হয়, দুদক সরকারের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। যত দূর মনে হয় এক-এগারোর সময়ের দুদকের চেয়ারম্যানও এমন বক্তব্য দেননি।’
দুদকের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলাগুলো যখন বিচারাধীন ছিল, তখন ওই মামলা পরিচালনায় তারা কতটা ব্যবস্থা করেছিল তা নিয়ে জনগণের মনে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। এমনকি ওই সব মামলায় রায় হওয়ার পর দুদক আপিলও করেনি।
এ সময় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা দুর্নীতির এক মামলার কথা তুলে ধরেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘ওই মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা শেখ সেলিম ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছিলেন। সেই মামলা দুদকের পক্ষপাতিত্বের কারণে বাতিল হয়েছে বলে জনগণ মনে করে।’
দুদকের সব আইনজীবী আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দুর্নীতির অন্য সব মামলায় দেখা গেছে এক থেকে দেড় মাস সময় দেয়া হয়। অথচ বেগম খালেদা জিয়ার মামলায় দুদকের আবেদন এবং চাপের কারণে তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে তারিখ দেয়া হয়। সাধারণ মানুষ যে সময় ও সুযোগ পান, সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হয়েও তিনি সেই সুযোগ পান না।’
দুদক স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে-এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন মির্জা ফখরুল।
খালেদার জামিন বাতিলের দাবি রীতিবিরুদ্ধ
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার যে মামলায় জামিন বাতিলের কথা বলা হচ্ছে, সেটি রীতিবিরুদ্ধ। এই জামিন সাধারণত একবার দেয়া হলে তা বাতিল হয় না।
জমির উদ্দিন বলেন, ‘আইনের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বেগম খালেদা জিয়ার পাওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু এরপরও তাকে বলা হচ্ছে- আদালতের অনুমতি না নিয়ে কেন বিদেশ গেলেন। শোকজ করে কারণ ব্যাখ্যা করতে মাত্র আধা ঘণ্টা সময় দেয়া হচ্ছে। এটাও হয় না। আমরা সেই শোকজের জবাব দিয়েছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ।