প্রাক্তন এক ছাত্রী তাড়াইলের তালজাঙ্গা আর সি রায় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মঈন উদ্দিন সাবেরীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন। বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ওই ছাত্রী মামলার অভিযোগ দায়ের করেন। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা জজ মো. আওলাদ হোসেন ভূঁইয়া কিশোরগঞ্জ মডেল থানাকে অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে আদালতে প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. মঈন উদ্দিন সাবেরী করিমগঞ্জ উপজেলার টামনী কোনাপাড়া গ্রামের মৃত মোস্তফা-ই-কাদেরের ছেলে। তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক।
মামলার বিবরণে বলা হয়, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. মঈন উদ্দিন সাবেরী ও ওই ছাত্রী একই গ্রামের বাসিন্দা। নির্যাতিত ছাত্রী গত বছর তালজাঙ্গা আর সি রায় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে বর্তমানে শহরের একটি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে পড়ছে। এই কলেজছাত্রীর অভিযোগ, তালজাঙ্গা আর সি রায় উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রধান শিক্ষক মো. মঈন উদ্দিন সাবেরী তাকে প্রায়ই কুপ্রস্তাব দিতেন। প্রধান শিক্ষকের ওই কুপ্রস্তাব বরাবরই অগ্রাহ্য করতেন এই ছাত্রী। মা-বাবা প্রবাসী হওয়ায় এসএসসি পাশের পর ওই ছাত্রী কলেজে ভর্তি হয়ে জেলা শহরের একটি মেসে থেকে লেখাপড়া করছিলেন। একই এলাকায় প্রধান শিক্ষক একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। এই সুবাদে তিনি ছাত্রীর মেসের সন্ধান পান। ছাত্রীর মেসের সন্ধান পাওয়ার পর থেকে প্রধান শিক্ষক সাবেরী প্রায়ই মেসে আসা-যাওয়া ও খোঁজখবর নিতেন। মাঝে মাঝে প্রধান শিক্ষকের বাসায় যাওয়ার প্রস্তাবও দেয়া হতো ওই ছাত্রীকে। গত ২১শে জুলাই প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী মেয়েটিকে বাসায় যেতে বলেছে বলে ওই ছাত্রীকে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। প্রধান শিক্ষকের এই মিথ্যা কথাকে সত্য ভেবে সরল বিশ্বাসে ওই ছাত্রী প্রধান শিক্ষকের ভাড়া বাসায় যান। সেখানে গিয়ে ওই ছাত্রী প্রধান শিক্ষকের বাসায় কেউ নেই দেখতে পান। এ সময় প্রধান শিক্ষক সাবেরী তার প্রাক্তন ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরেন। একপর্যায়ে ছাত্রীটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় কলেজছাত্রীর আত্মীয়-স্বজনেরা এলাকার মাতব্বরদের কাছে বিচার প্রার্থনা করেন। কিন্তু স্থানীয় মাতব্বররা মোটা অংকের টাকা খেয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করে। পরে থানায় মামলা করতে গেলে সেখানেও ব্যর্থ হন কলেজছাত্রী। এ পরিস্থিতিতে বুধবার কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে প্রধান শিক্ষককে আসামি করে কলেজছাত্রী ধর্ষণের মামলা করেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিন সাবেরী তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, সমাজে আমার মান-সম্মান নষ্ট করতে আমার প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মেয়েটিকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়েছে।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031