ফটিকছড়ি উপজেলা সংসদীয় আসন ১৮টি পুরো দস্তুর ইউনিয়ন আর দু’টি পৌর এলাকা নিয়ে । একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ধীরে ধীরে ঘনিয়ে আসায় বর্তমানে এ এলাকার সর্বত্রই চলছে রাজনৈতিক আলোচনা। বিশেষ করে উপজেলা বিএনপির কয়েকভাগে বিভাজন আর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদন্ড হওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুর পর আসনটিতে ধানের শীষের প্রার্থী হওয়া নিয়ে নানা সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এ উপজেলাকে বিএনপির দূর্গখ্যাত বলে পরিচিত। সুষ্ঠু নির্বাচনে এখান থেকে বিএনপির প্রার্থীদের জয়জয়কার হয়।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গন ক্রমেই সরগরম হয়ে উঠতে শুরু করেছে। এ আসনটিতে রয়েছে বি.এন.পি’র বিশাল ভোট ব্যাংক। এলাকার প্রার্থী যেই হোক না কেন, প্রার্থীদের ব্যক্তি ইমেজের চেয়ে দলীয় প্রতীককেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন সাধারণ ভোটাররা। একাদশ নির্বাচনকে ঘিরে মাঠে সক্রিয় হয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী। তিনি এ উপজেলার বাসিন্দা। পেশাজীবি এ নেতা আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে লড়তে চান।

অপরদিকে এ উপজেলার বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে সাকা পরিবারের প্রতি আলাদা একটা দুর্বলতা রয়েছে। এখানে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সহধর্মীনি ফরহাদ কাদের চৌধুরী কিংবা ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী মনোনয়ন নিয়ে লড়তে পারেন এমন গুঞ্জন থাকলেও তাদের কোন বিচরণ এ উপজেলায় নেই।

কেন্দ্রিয় যুবদলের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী ধানের শীষের মনোনয়ন পেতে নিরবে লবিং করছেন বলে মনে করেন বিএনপির তৃণমূলের নোতকর্মীরা। তবে, তিনি নিজ থেকে এবার মনোনয়ন প্রার্থনা করবেন না বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আমার মনোনয়ন চুড়ান্ত ছিল, সেবার ম্যাডাম খালেদা জিয়া আমাকে বলেছিলেন, তুমার বয়স কম আছে, আগামীতে তুমি নির্বাচন করিও এবার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ছেড়ে দাও। এবার তিনি নিজ থেকে আমাকে মনোনয়ন দিলে অবশ্যই নির্বাচন করবো।

এবার ফটিকছড়ি আসন থেকে বিএনপির টিকিট পেতে তদবীর করতে পারেন পেশাজীবি নেতা ডা:খোরশিদ জামিল। তাকে বর্তমানে বেশ কিছূ মিটিং মিছিলে দেখতে পাওয়া যায়।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্ণেল(অব.) আজিম উল্লাহ বাহার চৌধুরীও মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানা যায়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তাকে রাজনীতির মাঠে তেমন দেখতে পাওয়া যায় না।
মনোনয়ন চাইতে পারেন উপজেলা বিএনপির একাংশের আহবায়ক ছালাহ উদ্দিন আহমেদ ও অপর অংশের আহবায়ক সরোয়ার আলমগীর।

বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ফটিকছড়ি এলাকাটি বিএনপি’র নিরাপদ ও শক্তিশালী দুর্গ হিসেবে খ্যাত। এ আসন থেকে প্রথমেই প্রবীণ রাজনীতিবিদ প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী জামাল উদ্দীন আহমদ জয়লাভ করেন। সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ১৯৯৬ সালে দলবদল করে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ১৫ ই ফেব্রুয়ারী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে জয় লাভ করেন। ফটিকছড়িতে সে সময় থেকেই বিএনপি’র প্রার্থী সংকট দেখা যায়। বি.এন.পি’র ভোট ব্যাংকের চমৎকার এলাকাখ্যাত এ আসনটি নিজেদের করায়ত্বে আনতে এলাকার অনেককে দাড় করিয়েও বি.এন.পি আসনটি উদ্ধার করতে টেকনিক্যলি অক্ষম হয়। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে প্রায় ১৭ হাজার ভোটের ব্যাবধানে হারিয়ে আ.লীগ প্রার্থী রফিকুল আনোয়ার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে পূণরায় বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী প্রায় বিশাল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির জাদরেল নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (সাকা) এটিএম পেয়ারুল ইসলামকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031