সবচেয়ে বড় যে বার্তাটা এসেছে, সেটা হলো নির্বাচন কমিশনকে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে আজকে (সংলাপে) যে আলোচনাটা হয়েছে । এই মুহূর্তে যে পরিবেশ বিরাজ করছে দেশের ভেতরে, সেখানে একটি স্বাধীন, দৃঢ় নির্বাচন কমিশন কার্যকর, এটা যতক্ষণ না দৃশ্যমান হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কার্যকর নির্বাচনের ব্যাপাকে আমাদের আশা কম। এটা একটা বড় বিষয়। আর সে জন্য নির্বাচন কমিশনের হাতে যেসব আইনি ও প্রশাসনিক ক্ষমতা আছে, সেগুলোকে কার্যকর ব্যবহার করার কথা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে যে বলেছিল, যতক্ষণ পর্যন্ত তফসিল ঘোষণা না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের করার কিছু নেই। এই বক্তব্যকে আজকে আমরা গ্রহণ করিনি। আমরা মনে করি, করার জন্য এখনই তাদের করার অনেক কিছু আছে প্রস্তুতি হিসেবে। সেটার ব্যাপারেও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব বেশ কিছু গেছে। কিছু আইন কার্যকর করার ব্যাপারে কথা হয়েছে। কিছু আইন সংশোধন করার কথা বলা হয়েছে এবং কিছু কিছু নতুন আইনও করার কথা বলা হয়েছে।
কতগুলো আলোচনার বিষয় বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ব্যাপক ঐক্যমত আছে, এসব কিছু বিষয় হলো, ১. ‘না’ ভোটকে পুনস্থাপন করতে হবে, ২. সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করার সুযোগ রাখতে হবে, ৩. ধর্মের কোনো ব্যবহার করা যাবে না রাজনৈতিক প্রচারণার ভেতরে, ৪. যে অর্থায়ন আছে, সেটাকে ভালভাবে পরীবিক্ষণ করার জন্য এবং কোথা থেকে কোন উৎস থেকে টাকা আসছে, সেটা দেখার জন্য বিশেষ আইন করার প্রয়োজন পড়েলে সেটা করা হবে।
এ ছাড়া ভোটার তালিকা ও সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে কিছু কিছু আলোচনা হয়েছে।
আরও একটি ইস্যুবারবার আলোচনায় এসেছে যে, নির্বাচনকালীন সরকার কার্যত একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকার ব্যতিরেকে আর কোনো ভূমিকা পালন করতে পারবে না। সেটা যে ধরনের রাজনৈতিক কাঠামোর ভেতরেই হোক না কেন তাদের কোনো অবস্থাতেই দৈনন্দিন কাজের বাইরে কোনো কিছু করার সুযোগ থাকবে না। সবচেয়ে বড় কথা যেটা সেটা হলো প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখার জন্য ইলেকশন কমিশনের হাতে যে ক্ষমতা আছে, সেটাকে সর্বাঙ্গীন প্রয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। যারা যারা রাজনৈতিক দলের মনোভাবাপন্ন অথবা সম্পৃক্ত, সেই ধরনের আমলা এই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্বাচনের কাজের থেকে দূরে রাখার জন্য বলিষ্ঠভাবে মত প্রদান করা হয়েছে।
হোসেন জিল্লুর রহমান: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা