দুঃসংবাদ বাড়ছে বিদেশে শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের জন্য। সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকে একের পর এক আসছে খারাপ খবর। বাংলাদেশি শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে নতুন নতুন দেশ থেকে তালিকা ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, দ্রুত অবৈধ শ্রমিকদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করো। অন্যথায় ভিসা নিষিদ্ধসহ নানা বার্তা দেয়া হচ্ছে। শ্রম বাজারে গত এক মাসের চিত্র খতিয়ে দেখলে এমনটাই আভাষ মিলেছে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এনিয়ে চিন্তিত নয়। তারা বলছেন, বিভিন্ন দেশে যাওয়া ও ফিরে আসা রুটিন বিষয়। এখানে চিন্তিত বা দুঃসংবাদের কিছু নেই। সৌদি সরকারের সাধারণ ক্ষমার আওতায় ৫০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক দেশে ফিরতে আবেদন করেছেন। গত ২৫শে জুলাই সৌদি গেজেট এ খবর দিয়েছে। সৌদি গেজেটের সংবাদে বলা হয়েছে, প্রায় ৪৫ হাজার বাংলাদেশি তাদের স্বদেশে ফেরার প্রক্রিয়া সৌদি আরবেই সম্পন্ন করতে পেরেছে। এর মধ্যে ২০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক সৌদি আরব ত্যাগ করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়া বা বৈধ পথে ইউরোপে গিয়ে ‘অবৈধ’ হয়ে পড়া ৯৩ হাজার বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাদের ফেরানোর প্রক্রিয়া সংক্রান্ত ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরস’ (এসওপি) সইয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২৮ রাষ্ট্রের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের অব্যাহত চাপের কারণে বাংলাদেশ সরকারকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইউরোপে থাকা বাংলাদেশিদের বিষয়ে ঢাকাকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য বা পরিসংখ্যান শেয়ার করেনি ব্রাসেলস। তবে ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) পরিসংখ্যান অধিদপ্তর ইউরোস্ট্যাট এ নিয়ে তথ্য প্রকাশ করে বলেছে, ইইউভুক্ত দেশগুলোয় ২০০৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অবৈধভাবে প্রবেশ করেছেন মোট ৯৩ হাজার ৪৩৫ জন বাংলাদেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবেশ করেন ২০১৫ সালে, ২১ হাজার ৪৬০ জন। ২০১২ সালে ইউরোপে যান ১৫ হাজার ৩৬০ জন বাংলাদেশি। এদিকে অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টায় তুরস্কে গিয়ে আটকা পড়েছেন প্রায় ২০০০ বাংলাদেশি। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আল্লামা সিদ্দিকীকে উদ্ধৃত করে গত ৫ই জুলাই তথ্য অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। তথ্যবিবরণীতে বলা হয়, তুরস্ক হয়ে যেসব বাংলাদেশি অবৈধভাবে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করছেন তাদের রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের তরফে এরই মধ্যে সতর্ক করা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত সরকারি মাধ্যমকে জানান, সামপ্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে ইরান, লেবানন ও জর্ডানে বৈধভাবে কর্মরত বাংলাদেশিদের অনেকের ইউরোপে অনুপ্রবেশের আশায় তুরস্কে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। আঙ্কারা দূতাবাস ও ইস্তাম্বুল কনস্যুলেটের হিসাব মতে, দেশটিতে এ মুহূর্তে ২০০০ বাংলাদেশি আটকা রয়েছেন। তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, তুরস্কের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদ্যমান অভিবাসন চুক্তির আওতায় ইউরোপে পাড়ি জমানো অসম্ভব, তাই এ ধরনের অপচেষ্টা অর্থহীন। সেখানে রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, বাংলাদেশি নাগরিকরা তুরস্কে বিভিন্ন সংঘবদ্ধ দলের খপ্পরে পড়ে অর্থের লোভে বিভিন্ন সন্ত্রাসমূলক কাজে জড়িত হচ্ছেন। এর আগে গত ৩০শে জুন থেকে মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশি ধরপাকড় শুরু হয়। ধরপাকড়ের সময় এক হাজার অবৈধ বাংলাদেশি মালয়েশিয়াতে আটক হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের বাইরে কুয়েত ও ইরাকসহ আরো কয়েকটি দেশে বাংলাদেশিদের শ্রমবাজার ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | ||||||
2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
30 | 31 |