প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুটিকতক ভ্রান্ত ধারণার মানুষের কারণে আজ গোটা মুসলিম উম্মাহ বিপদে আছে বলে মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, তারা ইসলামকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে, এ কারণে শান্তির ধর্ম সম্পর্কে মানুষের মধ্যে ভুল ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে। আজ সারা বিশ্বে মুসলমানদের সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। তাদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটছে।
শনিবার রাজধানীর আশকোনার হাজিক্যাম্পে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এবারের হজ কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।
ইসলামে কোথাও আত্মঘাতী হওয়ার কথা নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী হজযাত্রীদের কাছে বিভ্রান্তির শিকার মুসলমানদের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন। বিশেষ করে বাংলাদেশে যেন সব ধর্মের মানুষ সহাবস্থানে থাকতে পারে সে ব্যাপারে দোয়া করার কথা বলেন। পবিত্র ধর্মকে কেউ যেন কলুষিত করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে হজযাত্রীদের জন্য তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। হাজিদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। হজ ব্যবস্থাপনার সফলতার ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০০৬ সালে বিএনপির শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৪৭ হাজার মাত্র। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর হজযাত্রীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এবার এক লাখ ২৭ হাজার লোক হজে যাচ্ছেন। এটাই বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ হজযাত্রী বলে জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি অনেক বার হজ ও ওমরা করেছি। আমার দাদা-দাদি, নানা-নানি, বাবা-মাসহ সবার জন্য বদলি হজ করিয়েছি। আমি যতবার হজে গেছি সবসময় হজযাত্রীদের সমস্যা কী সেটা জানার চেষ্টা করেছি। হজের সময় আমি মিনার তাঁবুতে ঘুরে ঘুরে সার্বিক অবস্থা দেখেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তখন সরকারে না, তবুও হজযাত্রীদের অসুবিধার কথা সৌদি বাদশাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। আমরা ক্ষমতায় আসার পর হজযাত্রীদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। দিন দিন হজযাত্রীদের সেবার মান বাড়ছে।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে ইসলামের উন্নয়নের জন্য সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উন্নয়ন, মসজিদভিত্তিক শিক্ষা, মডেল মসজিদ প্রকল্প, কওমি মাদ্রাসা সনদের স্বীকৃতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।
বক্তৃতার এক পর্যায়ে স্বজন হারানোর প্রসঙ্গ তুলে আবেগাপ্লুত শেখ হাসিনা হজযাত্রীদের কাছে নিজের জন্য, পরিবারের সদস্যদের জন্য এবং সরকার ও দেশবাসীর জন্য দোয়া চান।