রবিবার বেলা ১২টার দিকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের সামনের মূল ফটকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কটূক্তিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগের মানহানির মামলায় জামিন নিতে এসে আদালত প্রাঙ্গণে হামলার শিকার হয়েছেন। এসময় তার গাড়িকে লক্ষ্য করে ডিম ও ইট নিক্ষেপ করা হয়।
জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে মামলাটিতে ইমরান ঢাকা মহানগর হাকিম এসএম মাসুদ জামানের আদালতে জামিন নিতে আসেন। আদালত জামিনের আবেদন মঞ্জুর করার পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমকর্মীদের মামলার বিষয়ে বিফিং করে স্ত্রীসহ প্রাইভেটকার যোগে বেড়িয়ে যাওয়ার সময় গাড়িটি সিএমএম আদালতে মূল ফটকের সামনে আসলে কতিপয় দুষ্কৃতিকারী ইমরানের গাড়ি লক্ষ্য করে ডিম এবং ইটের ভাঙা টুকরা ছুড়তে থাকেন। এসময় ইমরান স্ত্রীসহ গাড়ি থেকে নেমে সিএমএম আদালতে দ্বিতীয় তলার ২৮ নম্বর আদালত কক্ষে আশ্রয় নেন।
প্রায় ৩০ মিনিট ২৮ নম্বর আদালত কক্ষে থাকার পর আবার নিচে নেমে আসেন এবং মিডিয়ায় পুনরায় হামলার বিষয়ে বলেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তার উপর হামলা চালানো হয়েছে। এরপর তিনি আবার গাড়িতে করে পুলিশ পাহারায় স্ত্রীসহ বেরিয়ে যান। ওই সময় হামলাকারীরা আদালতের সামনের জনসন রোর্ডে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগন দিচ্ছিলেন।
এর আগে গত ৩১ মে ছাত্র লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও পাঠচত্র বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রাব্বানী আদালতে এ মামলা করেন। ওইদিন আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আজ রবিবার (১৬ জুলাই) আসামিদের স্বশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মামলায় বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে গত ২৮ মে রাজধানীর শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের এক সমাবেশে ‘ছি. ছি. হাসিনা, লজ্জায় বাঁচি না’শিরোনামে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মানহানিকর স্লোগান দেয়া হয়। যা প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের জন্য মানহানিকর। ওই সমাবেশে ইমরান এইচ সরকার এবং সনাতন উল্লাস নেতৃত্ব দেন।
গোলাম রাব্বানীর আইনজীবী নোমান হোসোইন তালুকদার বলেন, দণ্ডবিধির ৫০০ ধারার মামলাটি করা হয়।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালে শাহবাগে গণজাগরণের আন্দোলনের সূচনায় অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে এর আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন ইমরান। শুরুতে ছাত্রলীগ এই মঞ্চের সঙ্গে থাকলেও পরে সরে যায়।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণের প্রতিবাদে ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে গণজাগরণ মঞ্চের মশাল মিছিল থেকে শেখ হাসিনাকে নিয়ে ওই শ্লোগান দেওয়া হয়েছিল। শ্লোগানের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। গত সোমবার রাতে ছাত্রলীগের মিছিল থেকে শাহবাগে ইমরান সরকারকে অবাঞ্ছিতও ঘোষণা করা হয়। সমাবেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যেখানে ইমরান এইচ সরকার ও সনাতনকে দেখা হবে, সেখানেই কুত্তার মতো পেটানো হবে।’