আপিল বিভাগ বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এবং খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা চলার পক্ষে দেয়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে দুজনের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন । এই আদেশের ফলে বিচারিক আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলতে আর কোনো আইনগত বাধা রইল না।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেন।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। মওদুদ আহমদের পক্ষে ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী এবং খন্দকার মোশাররফের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
আদালত সূত্র জানায়, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ আর্জনের মামলা বাতিলের জন্য মওদুদ আহমদ ও মোশাররফ হোসেন হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্ট তাদের আবেদন খারিজ করে দিলে আপিল করেন দুইজনই। আপিলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৪ সালে তাদের আবেদন দুটি খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এরপর দুইজনই আপিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন, যা আজ খারিজ হয়ে গেল।
মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে করা মামলার নথি থেকে জানা যায়, সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ২৩ জুলাই সম্পদের তথ্য ও আয়ের বিবরণী চেয়ে মওদুদ আহমদকে নোটিশ দেয় দুদক। ২০০৭ সালের ২৩ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যালয়ে মওদুদ আহমদ সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। এতে তিনি ৪ কোটি ৪০ লাখ ৩৭ হাজার ৩৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন। এছাড়া তদন্ত অনুসন্ধানে ৭ কোটি ৩৮ হাজার ২৩৭ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পান দুদক, যা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। এই অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় মামলা করে দুদক।
২০০৮ সালের ১৪ মে তদন্ত শেষে মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। চলতি বছরের ২১ জুন এ মামলায় মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। আগামী ২৬ জুলাই মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ইমরুল কায়েসের আদালতে মামলাটির বিচারকাজ চলছে।
অন্যদিকে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১২ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন এবং তিন কোটি টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৮ সালের ১০ জানুয়ারি দুদক মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় একটি মামলা করেন। পরে ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।