ইলেক্ট্রনিক মেশিন বা ইভিএম ব্যবহার হচ্ছে না আগামী নির্বাচনে ভোটগ্রহণে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের যে কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে তাতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রবিবার এই কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করে নির্বাচন কমিশন। সাতটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে এই পরিকল্পনা অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
রবিবার বিকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে ইসি সচিব মো. আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
গত ২৩ মে সাতটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের খসড়া রোডম্যাপের ঘোষণা দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইভিএমে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানালেও রোডম্যাপে বহুল আলোচিত ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি বাদ দেয়া হয়। রোডম্যাপের খসড়া ঘোষণাকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো. নূরুল হুদা বলেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা না পেলে আমরা আগামী নির্বাচনে কোনোভাবেই ইভিএম ব্যবহারে যাবে না কমিশন। তবে এর প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো সবার কাছে উপস্থাপন করা হবে। দলগুলো একমত না হলে ইভিএম চাপিয়ে দেয়া হবে না। ইভিএম বিষয়ে কমিশন কোনো ধরনের রিস্ক নেবেন না বলেও জানিয়েছিলেন সিইসি। চূড়ান্ত রোডম্যাপে সেই খসড়া প্রস্তাবের প্রতিফলন ঘটেছে।
নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপে সাতটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এগুলো হলো-১. সব রাজনৈতিক দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার লক্ষ্যে আইনি কাঠামো পর্যালোচনা ও সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ। এই কার্যক্রম আগামী জুলাই থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ২. নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সহজীকরণ ও যুগোপযোগী করার কার্যক্রমও জুলাই থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ৩. নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ। চলতি বছরের আগস্টে এই কার্যক্রম শুরু হয়ে আগামী ২০১৮ সালের এপ্রিলে শেষ হবে। ৪. ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে। ৫. ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে ২০১৮ সালের জুন থেকে ভোটগ্রহণের পূর্বে বা তফসিল ঘোষণার পর। ৬. নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও নতুন রাজনৈতিক দলসমূহকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ, আগামী অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের মার্চ পর্যন্ত। ৭. সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ‘ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ে’র ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে আগামী বছরের জুলাই থেকে সময়সূচি ঘোষণার পূর্বে এমনকি ভোটগ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত।
নির্বাচন কমিশন সচিব আদুল্লাহ বলেন, ৩১ জুলাই থেকে সুশীল সমাজের সঙ্গে বসবে নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে কথা বলবেন তারা।
সংবিধান অনুযায়ী সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে যেকোনো দিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ হিসেবে ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর থেকে ২০১৯ এর ২৮ জানুয়ারির মধ্যে দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা বেশি বলে সূত্রে জানা গেছে।