ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন হলো বলে মনে করছেন রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রায় ঘোষণার পরপর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
বিচারক অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন আইনজীবী মসজিল মোরসেদ। দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৫ মে এই সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল সোমবার খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। ফলে হাইকোর্টের রায়ই বহাল থাকলো।
আপিল বিভাগের রায়ের পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে আজ ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদের হাতে নেয়া হয়েছিল এ রায়ের মাধ্যমে তা খারিজ ও অকার্যকর হয়ে গেল। এখন থেকে বিচারকদের অপসারণে বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।’
মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য চার দশক পর নতুন দিগন্ত উন্মোচন হলো। যেভাবে বিচারকদের অপসারণে ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছিল, এ দেশের অধিকাংশ মানুষ মনে করে এই সংশোধনী থাকলে বিচারপতিরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারত না। যার কারণে এ দেশের জনগণ ন্যয়বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতো।’
‘এ রায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগের ইতিহাসে ও জনগণের স্বার্থে এক ঐতিহাসিক রায় প্রকাশ করা হলো। আমরা আইনজীবীরা সবাই খুশি।’
এ রায়ের মাধ্যমে জাতীয় সংসদের সঙ্গে বিচার বিভাগের কোনো বিরোধ হবে কি না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মসজিল মোরসেদ বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে বলা আছে, আপিল বিভাগ যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটা সবাইকে মানতে হবে। আপিল বিভাগ যে সিদ্ধান্ত দিবে সেটি চূড়ান্ত। আপিল বিভাগ যখন সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছে, বিচার বিভাগের সাথে জাতীয় সংসদের সংঙ্গে কোনো বিরোধের কোনো সুযোগ নেই। বরং যে বিরোধ ছিল তা দূর হলো।’
‘আপিল বিভাগের সাত বিচারপতি একমত হয়ে এ রায় ঘোষণা করেছেন। তবে হাইকোর্টের রায়ের মধ্যে কিছু শব্দের বিষয়ে অ্যামিকার কিউরিরা কিছু আপত্তি করেছিলেন, আদালত বলেছেন সেগুলো এক্সপানস করে দেবেন।’