কর্মজীবী মানুষ ঈদের লম্বা ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছেন । ফলে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। নদীপারের অপেক্ষায় রয়েছে ছোট-বড় পাঁচ শতাধিক যানবাহন।

শনিবার দুপুরে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে বাংলাদেশ হ্যাচারী এলাকা পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তার দুইপাশে বাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারসহ পাঁচ শতাধিক ঢাকাগামী যানবাহন ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে।

এদিকে, যানবাহনের দীর্ঘ লাইনের ফলে বিভিন্ন পরিবহনের লঞ্চ পারাপার যাত্রীদের ঘাট থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে মহাসড়কের উপর নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে লঞ্চঘাটে পৌঁছাতে হচ্ছে যাত্রীদের। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। এর মধ্যে সকাল থেকে বৃষ্টিতে যাত্রীদের দুর্ভোগের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

আর এ সুযোগে রিকশা ও ভ্যান চালকরা জনপ্রতি ৩০/৪০টাকা করে ভাড়ায় লঞ্চ ঘাট পর্যন্ত পৌঁচ্ছে দিচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদ শেষে দৌলতদিয়া ঘাটে ঢাকাগামী বিভিন্ন গাড়ি ও মানুষের চাপ বেড়েছে। এসব গাড়ি পারাপারে ১৮টি ফেরি চলাচল করছে। চারটি ঘাটই সচল রয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির সিরিয়ালে থাকা গাড়ির সংখ্যা কমে আসবে।

দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার মো. নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, ঈদ শেষে কর্মজীবী মানুষ ঢাকায় ফিরছেন। তাই দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে কর্মমুখী হাজারো যাত্রীর ঢল নেমেছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যাত্রী পারাপারে ২৫টি লঞ্চ চলাচল করছে।

তিনি আরও বলেন, লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হচ্ছে না। স্বাভাবিক সময়ের মতো এখনো ভাড়া ২৫ টাকাই নেয়া হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে যাত্রীদের কাছ থেকে কোনোরকম অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সুযোগ নেই।

ঘাট সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, স্বাভাবিক সময়ে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি ও লঞ্চে প্রতিদিন গড়ে ৮/১০ হাজার ছোট-বড় যানবাহনে ২০/২৫ হাজার মানুষ চলাচল করেন। ঈদের আগে ও ঈদ শেষে এর সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এ কারণে প্রতিবছর ঈদের আগে ও পরে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট ও বাস টার্মিনাল এলাকাগুলোতে ছিনতাইকারী ও পকেটমারদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। তবে এবার ঈদের আগে এ নৌপথ দিয়ে ঘরমুখো মানুষ নির্বিগ্নে তাদের গন্তব্যে পৌঁছায়। ঈদ শেষে কর্মে ফেরার পথে সিরিয়ালে আটকে থাকা ছাড়া যাত্রীদের অন্য কোনো দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে না।

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার সালমা বেগম (পিপিএম) বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঈদের আগে থেকেই দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট, বাস টার্মিনাল ও মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। তারা সার্বক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নজরদারি করছে। যাত্রীদের ফেরিতে ওঠার জন্য সিরিয়ালে আটকে থেকে কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া, নিরাপত্তার দিক থেকে তাদের কেনো সমস্যা হচ্ছে না।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031