শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষার মান কমেছে- এই কথার কোনো ভিত্তি নেই বলে সংসদে মন্তব্য করেছেন । তিনি বলেন, শিক্ষার মান কমে গেছে, এই কথা বলা এখন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, যদি কথাগুলো ঠিক হতো, তাহলে আমাদেরকে ৫০ হাত মাটির নিচে চলে যেতে হতো।’

বৃহস্পতিবার সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে প্রস্তাবিত দায়যুক্ত ব্যয় ব্যতীত অন্যান্য ব্যয় সম্পর্কিত মঞ্জুরি দাবির ওপর আলোচনায় খাদ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ ফাইভ পাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। চলতি বছর এসএসসিতে পাসের হার ও জিপিএ ফাইভ গত বছরের চেয়ে কম হওয়ার পর শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এবার খাতা দেখায় কড়াকড়ি ছিল।

শিক্ষাবিদরা অভিযোগ করে আসছেন, খাতা দেখায় উদার মনোভাবের কারণে এর আগে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী পাস করেছে এবং জিপিএ ফাইভ বেশি পেয়েছে। তবে এই অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।

সংসদে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার সংখ্যাগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন চ্যালেঞ্জ মান বৃদ্ধি করা। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে আমাদের ছেলে মেয়েরা এখন অনেক কিছু পড়ছে। সমস্ত তথ্য আদানপ্রদান হচ্ছে পেপারলেস। সাধারণ জ্ঞান ছেলেমেয়েদের বাড়ছে। সেটা বিবেচনা না করলে তাদেগর প্রতি অবিচার করা হবে।’

‘আমাদের দেশে মান কমে গেছে আর সারা বিশ্বে বেড়ে গেছে, সেটা ঠিক নয়’ এমন মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এমডিজি ফোর গোলে বরা হচ্ছে সারা বিশ্বে শিক্ষার মান বাড়াতে হবে। ইউনেস্কোতে আলোচনা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে তারা কোনটা অনুসরণ করবে। তারা বলছে উন্নয়নশীল দেশেরটা। সেখানে বিশেষ কোনো দেশের শিক্ষার মানের বিষয় নিয়ে বলা হয়নি।’

নাহিদ বলেন, ‘শিক্ষার সংখ্যাগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে, এখন দরকার মানসম্মত শিক্ষক। এ জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রায় ১৫ লক্ষ শিক্ষককে বিভিন্ন পর্যায়ে ট্রেনিং দিচ্ছি।’

‘আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন দেশে উদ্বেগজনক হারে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছিল। কিন্তু আমরা নানা প্রচার-প্রচারণায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে।’

আমরা ২০১০ সালে একটা শিক্ষানীতি করেছি। এটা নিয়ে কোন রাজনৈতিক দল সমালোচনা করে নাই। এ শিক্ষানীতি আমরা ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করছি।

কিছু শিক্ষকদের নৈতিক সমস্যা দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘তাঁরা ক্লাসে পড়ান না। বাড়িতে গেলে টাকা নিয়ে পড়ান। ক্লাশে টাকা নিয়ে উত্তর বলে দেন। এটা সমাজিক অবক্ষয়ের প্রভাব। এটা থেকে বের করে আনার চেষ্টা আমরা করছি।’

প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস দীর্ঘ দিন ধরেই হচ্ছিল আমরা তা বন্ধ করেছি। কিন্তু যখন প্রশ্ন শিক্ষকদের হাতে যাচ্ছে তখন তারা তা ফাঁস করে দিচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা আমরা করছি।’

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যে নয় হাজার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ভবন নির্মাণের কার্যক্রম শেষ করেছি। আর দেড় হাজারের কাজ শেষ হবে। আরও সাড়ে আটহাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণের কার্যক্রম আগামীতে শুরু হবে।’

এমপিও প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাঁর সাথে সমন্বয় করে আমরা একটা কমিটি করেছি। সেই কমিটির আহ্বায়ক অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী। কমিটি একটি নীতিমালা তৈরি করছেন। সেই নীতিমালা অনুযায়ীই এমপিও হবে।’

পিএসসি জেএসসি পরীক্ষা চলবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো গরিব অঞ্চলের জন্য, সাধারণ মানুষের জন্য। নতুন বই যেমন আকর্ষণ ঠিক তেমনি পিএসসি এবং জেএসসিও একটা আকর্ষণ। এটা আজকে বন্ধ করে দিলে অর্ধেক ছাত্রই ড্রপ আউট হয়ে যাবে।’

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031