সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ রাতের বেলায় ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবারের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ করে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন । তিনি মনে করেন, রাতের বেলায় এসব মাধ্যম ব্যবহারের কারণে ছেলে মেয়েরা দেরি করে ঘুম থেকে উঠছে এবং এ কারণে তাদের পড়াশোনা হচ্ছে না।

বুধবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে এ কথা বলেন রওশন।

বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘আমাদের আরেকটি বিপদ আছে ইয়াং জেনারেশনের জন্য। তারা সারারাত জেগে মোবাইল দেখে। ভাইবার দেখে, হোয়াটস আপ দেখে, ফেসবুক দেখে। তারা সারারাত ধরে দেখে, ১২টার সময় ঘুম থেকে উঠে। এটা বন্ধ করতে হবে গভর্নমেন্টের পক্ষ থেকে।’

‘সৌদি আরবে এগুলো বন্ধ, চায়নাতে ফেসবুক বন্ধ। আমাদের দেশে এগুলো বন্ধ করা হবে না কেন। রাত ১০ টার পর, ১১ টার পর এগুলো বন্ধ করে দেন। তাহলে ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করবে এবং সকালে ঠিক সময় ঘুম থেকে উঠবে। নাইলে শিক্ষার মান আপনি চেষ্টা করলেও বাড়াতে পারবেন না। এগুলো বন্ধ করে দিতে হবে’-বলেন বিরোধীদলীয় নেতা।

কোচিং বন্ধ, গাইড বই ছাপা বন্ধেরও তাগিদ দেন বিরোধীদলীয় নেতা।

খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার তাগাদাও দেন জাতীয় পার্টির নেতা। তিনি বলেন, ‘মাননীয় স্পিকারের মাধ্যমে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বলবো, আমাদের স্বাস্থ্যখাতে কোনো টাকা লাগবে না। কোনো ডাক্তার আমাদের দরকার নেই, কোনো হাসপাতাল দরকার নেই। কারণ, ভেজাল খেয়ে খেয়ে আমরা তো মরেই যাচ্ছি। কাজেই আমাদের টাকারই বা কী দরকার, হাসপাতালেরই বা কী দরকার, ডাক্তারেরই বা কী দরকার?’।

ভেজালবিরোধী অভিযানে সাজার পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে রওশন বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেট যায়, তারা ধরে, ১০ হাজার, ১২ হাজার ১৫ হাজার জরিমানা দেয়। এটা যথেষ্ট না। কাউকে গুলি করে মারা আর ভেজাল করে মারা একই তো। পুরো জাতিকে মেরে ফেলছে। এটা কোনো ব্যক্তি বিশেষের না। এগুলো আপনাদেরকে বন্ধ করতে হবে। নইলে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ লাগবে না। স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ মাননীয় অর্থমন্ত্রী অন্য খাতে দিয়ে দেন।’

‘নতুন প্রজন্ম কী খাচ্ছে? তারা কীভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলবে? এমন কোনো দোকান নেই যেখানে ভেজাল খাবার নাই’-বলেন রওশন

ঢাকা মেডিজেল হাসপাতালে অনকোলজি বিভাগে একটি যন্ত্র ১৯৯৬ সালে আনা হলেও এখনও সেটি চালু হয়নি জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিরোধীদলীয় নেতা।

প্রস্তাবিত বাজেটে কর্মসংস্থান তৈরির বিষয়টি স্পষ্ট নয় বলেও মন্তব্য করেন রওশন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রতি বছর ২৪-২৫ লক্ষ ছেলে মেয়ে পড়াশোনা করে বের হয়, কিন্তু এখানে কর্মসংস্থান নেই। বিশ্বব্যাংক গত বছর বলেছিল, মানুষ আছে ১৭ কোটি। এদের মধ্যে ১০ কোটি কর্মক্ষম। কিন্তু কাজ আছে পাঁচ কোটি। আর পাঁচ কোটি লোকের কাজ নেই। … তাদেরকে যদি চাকরি দিতে হয়, তাহলে শিল্প কল কারখানা গড়ে তুলতে হবে।’

কর্মসংস্থান না হলে ছেলেপুলে বিপথে যাবে বলে সতর্ক করে দেন বিরোধীদলীয় নেতা। বলেন, ছেলেমেয়েরা ড্রাগ খাবে, নয় জঙ্গি হবে।

পোশাক শিল্পে টানা আট থেকে ১০ ঘণ্টা কাজ করতে হয় জানিয়ে রওশন বলেন, এ কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ফলে তারা অনেকেই কৃষিখাতে ফিরে যাচ্ছে। তাদের জন্যও কাজের সুযোগ তৈরির তাগাদ দেন রওশন এরশাদ।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031