আকাশ টঙ্গি থেকে পাঁচ বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে শাহবাগের জাতীয় শিশু পার্কে ঘুরতে এসেছেন। মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে পার্কের টিকিট কিনে ভেতরে প্রবেশ করে ট্রেনে ওঠার জন্য কেনেন দুটি টিকিট। কিন্তু বিকাল সাড়ে পাঁচটা পেরিয়ে গেলেও ট্রেনে উঠতে পারেননি। লম্বা লাইনে তিন ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে থাকলেও ট্রেনে ওঠা সম্ভব হয়নি।

দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত ফারহান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সন্তান হওয়ার পর থেকে ইচ্ছা ওকে নিয়ে শিশুপার্কে যাব। ঈদের ছুটিতে তাই চলে আসলাম। এসে পরেছি আরেক বিপদে, না কোনো রাইডে চড়তে পারছি, না চলে যেতে পারছি। তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও এখনো ট্রেনে চড়তে পারিনি। একটা রাইডে চড়তেই দিন পার হয়ে যাচ্ছে।’

শুধু ফারহানই নয়, তার মতো আরও অনেকে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে রাইডে ওঠার। ঈদের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সকাল থেকেই পার্কটিতে ভিড় করতে থাকে শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ।

শাহবাগের জাতীয় শিশু পার্কে গিয়ে দেখে যায়, ঈদের দ্বিতীয় দিনে শত শত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে পার্কে প্রবেশ করছে। কয়েকটি টিকিট কাউন্টার হওয়ায় প্রবেশ করতে তেমন বেগ পেতে হচ্ছে না। পার্কের ভেতরে যেদিকেই চোখ যাচ্ছে সেদিকেই চোখে পড়ছে মানুষ আর মানুষ। ছোট ছোট শিশুরা পিতা-মাতার হাত ধরে ঘুরতে এসেছেন শিশু পার্কে। পার্কে ঢুকে অনেক শিশু দৌড়াদৌড়ি করছে। অনেকে খেলা করছে। অনেক শিশুর হাতে মাছ, পশু ও পাখির আকৃতির বেলুন। অনেকে ঘাসের ওপর বসে আছেন। আবার অনেকে বাসা থেকে আনা কাপড়ের বসে আছেন। নানা বয়সী মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হওয়া শিশু পার্কটিতে এক বর্ণিল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

এক রাইডে চড়তেই দিন পার

শিশু পার্কে এসে বিভিন্ন রাইডে চড়া শিশুদের স্বপ্ন থাকে। তাদের এই স্বপ্নও পূরণ করতে চায় বাবা-মা। কিন্তু ঈদের পরে যারা পার্কে ঘুরতে এসেছেন তাদের অনেকেই এই স্বপ্ন পূরণ করতে পারছেন না। কারণ একটি রাইডে চড়তে সময় লাগছে ৩ থেকে ৫ ঘণ্টা। সবচেয়ে বেশি সময় লাগেছে ‘ছোট মনিদের রেল গাড়ি’ ও ‘আনন্দ ঘূর্ণি’ চড়তে। এই দুই রাইডে চড়তে সময় লাগছে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা। আনন্দ ঘূর্ণিতেও প্রায় একই সময় লাগছে। অনেকে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে রাইডে চড়তে না পেরে টিকিট অন্যদের কাছে বিক্রি করছেন। অনেকে রাইডে না চড়েই বাসায় ফিরে যাচ্ছেন।

হারিয়ে যাচ্ছে শিশু

পিতা-মাতার হাত ধরে পার্কে ঘুরতে এসে অনেক শিশু হারিয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাওয়া শিশুদের নাম ধরে মাইকে ডাকা হচ্ছে। আবার হারিয়ে যাওয়া অনেক শিশুকে পার্কের অফিসে দিয়ে আসছেন।

শিশু পার্কের সামনে যানজট

ঈদের ছুটিতে সারা রাজধানী ফাঁকা। ঢাকার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে যেখানে সময় লাগছে অনেক কম, সেখানে শিশু পার্কের সামনে তৈরি হয়েছে যানজট। পার্কে আসা মানুষদের রাস্তা পার করাতে গিয়ে এই যানজট তৈরি হচ্ছে।

শিশু পার্কের অফিসে কর্মরত ফারহান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে এখন একটু ভিড় বেশি। প্রতি ঈদেই এমন ভিড় হয়। ছুটির দিন ছাড়া অন্যান্য দিনে এখানে এত ভিড় থাকে না। পুরো সপ্তাহে এমন ভিড় থাকবে বলে জানান তিনি।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031