দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় পাহাড় ধসের মত ঘটনা ঘটতে পারে বলে সতর্ক করে উপদ্রুত এলাকায় কয়েকদিন আগে মাইকিং করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন । তিনি জানান, এই প্রচারণায় গত দুইদিনে সাড়ে চার হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।
মঙ্গলবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় ধস নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য মন্ত্রী।
আগের দিন রাত থেকে প্রবল বৃষ্টিতে রাঙ্গামাটি, চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে পাহাড় ধসে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। তিন জেলার প্রশাসনের হিসাবে রাঙ্গামাটিতে ৫৮ জন, চট্টগ্রামে ২৭ জন এবং বান্দরবানে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রতি বছরই বর্ষায় পাহাড় ধসে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। কিন্তু বছর পার হলে স্থানীয়দের মধ্যে যেমন সচেতনতার অভাব দেখা দেয়, তেমনি প্রশাসনও তেমন গা করে না বলে অভিযোগ আছে। মঙ্গলবারের প্রাণহানিও এর কারণেই ঘটেছে কি না-এমন প্রশ্ন ছিল মন্ত্রীর কাছে।
জবাবে মন্ত্রী বলেন মাইকিং এর কথা। তিনি বলেন, ‘পাহাড়ি এলাকায় দুইদিন পূর্ব থেকেই লোকদেরকে লোকদেরকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া অব্যাহত রয়েছে।’
‘আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজন যতদিন নিজ আশ্রয়ে ফিরে না যাবেন, ততদিন তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে খাদ্য সরবরাহ করা হবে।’
মন্ত্রী জানান, পাহাড় ধসে আহতদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। মৃতদের সৎকারের জন্য তাৎক্ষণিক সহায়তা হিসেবে জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে।
উদ্ধার কার্যক্রম, খাদ্য সহায়তা ও আশ্রয় দেয়ার সকল চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, স্থানীয় প্রশাসন ও নেতৃবৃন্দ সবাই পাহাড় ধসে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার ও আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার আপ্রান চেষ্টা করছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, খাদ্য সহায়তা বাবদ বান্দরবানে ৭৫ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২ লক্ষ টাকা, রাঙ্গামাটিতে ১৮৮ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৬ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা ও চট্রগ্রামে ২২৮ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১১ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, উদ্ধার কাজ পরিচালনা ও তদারকির জন্য পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষযক মন্ত্রীসহ স্থানীয় সকল এমপিকে নিজ নিজ এলাকায় যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথাও জানান মন্ত্রী মায়া।
মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ্ কামাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদ, সশস্ত্রবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।