আব্দুল কুদ্দুস কসাই চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী কে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়ার পর আদালত পুলিশকে বিভ্রান্ত করে ছাড়িয়ে নেয়ায় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদারকে এজলাশ কক্ষে আটকে থাকতে হয়েছে বেশ কিছুক্ষণ। পরে আসামিকে ডেকে এনে পুনরায় পুলিশের জিম্মায় দিলে ছাড়া পান বাসেত মুজুমদার।
মঙ্গলবার (৬ জুন) বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির সাংবাদিকদের বলেন, ‘চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী আব্দুল কুদ্দুস একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় আদালতে আগাম জামিন নিতে এসেছিল। কিন্তু আদালতে তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী দায়িত্বরত পুলিশ আসামিকে কারাগারে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করার সময় আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার পুলিশকে বিভ্রান্ত করে শীর্ষ এই সন্ত্রাসীকে ছাড়িয়ে নেন এবং আদালত চত্বর ত্যাগ করতে বলেন।’
পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছাড়িয়ে নেয়ার বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে আদালতের নজরে আনে পুলিশ। তখন আদালত আইনজীবী বাসেত মজুমদারকে দ্রুত তলব করে। সঙ্গে সঙ্গে বাসেত মজুমদার এজলাস কক্ষে হাজির হলে কোর্ট তাকে প্রথমে ভর্ৎসনা করে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিকে পুলিশের জিম্মায় দিতে বলে।
এ সময় আদালত বলেন, ‘আসামিকে পুলিশের জিম্মায় দিতে ব্যর্থ হলে মামলা সংশ্লিষ্ট কনিষ্ঠ আইনজীবী রেজাউল করিমকে আসামির বদলে কারাগারে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন।’
এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন এবং সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন আদালত কক্ষে এসে বাসেত মজুমদারের পক্ষে এ ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পাশাপাশি আসামিকে হাজির করারও প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রতিশ্রুতি দেয়ার প্রায় আধাঘণ্টা পর বাসেত মজুমদার আসামিকে ডেকে এনে আদালত পুলিশের হাতে তুলে দিলে তিনি এজলাস কক্ষ থেকে বের হওয়ার অনুমতি পান। পরে আদালত আসামি আব্দুল কুদ্দুস কসাইকে শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামের বায়েজিত বোস্তামী থানার ব্যবসায়ী নাজিমুদ্দিনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনায় চলতি বছরের ১২ এপ্রিল বায়েজিত বোস্তামী থানায় শীর্ষ এই সন্ত্রাসীসহ ২৮ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।
এ ঘটনায় জামিন নিতে এসেছিলেন আসামি আব্দুল কুদ্দুস কসাই। মাদক ব্যবসায়ী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত আব্দুল কুদ্দুস কসাই চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার জালালাবাদ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। আব্দুল কুদ্দুস কসাই স্থানীয় যুব সংগঠন কর্মী মেহেদী হাসান বাদল হত্যা মামলারও আসামি হিসেবে নাম রয়েছে বলেও জানা যায়।