বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগামী অর্থবছরে রাষ্ট্রপরিচালনার জন্য ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার যে হিসাব দিয়েছেন তাকে লুটপাটের বাজেট বলেছেন ।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অডিটোরিয়ামে এক ইফতার মাহফিলে এই মন্তব্য করেন বিএনপি নেত্রী। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৬তম শাহাতৎ বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারসহ বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগের চুরি করার সুযোগ দিয়েছে এ বাজেটে। এ বাজেট তো আর অর্থমন্ত্রীর না, এ বাজেটও তৈরি হয় হাসিনার কথা মত। কাজেই হাসিনা যা চান বাজেট তাই। আর এই বাজেট কি আর বাজেট থাকবে নাকি। পরে দেখবেন বিভিন্ন প্রকল্প বাজেট বাড়িয়ে নেবে।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘সরকার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। চালের দাম এত বেড়েছে যে দেশের গরিব মানুষ খেতে পারে না। কাজেই আমরা মনে করি গ্যাসের দাম বাড়ানো বন্ধ করুন। গ্যাসের টাকাও হবে লুটের টাকা। এগুলো বন্ধ করেন, দেশের মানুষের দিকে একটু তাকান।’
ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত কক্সবাজারে এখনও ত্রাণ যায়নি বলেও অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া। বলেন, এখন পর্যন্ত সাহায্য দেওয়ার জন্য কেউ যায়নি।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করছে ৫ জানুয়ারির মত আরেকটি নির্চাবাচন করতে। কিন্তু সেই নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ অংশগ্রহণ করবে না। কোন দল অংশগ্রহণ করবে না। তারপরও যদি আওয়ামী লীগ জোর করে নির্বাচন করে তাহলে তাদের সেই নির্বাচন থেকেই বিদায় নিতে হবে।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দুর্নীতিবাজ, খুনি, মিথ্যাবাদী, অত্যাচারী। এটা পরিষ্কার। আওয়ামী লীগের হাতে দেশ সম্পদ কোনটিই নিরাপদ নয়।’
‘সরকারের থাবা এতো বেশি যে সব দিকে তারা হাত দিয়েছে। কোন জায়গা তারা বাদ রাখে নাই। সব তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। … প্রধান বিচারপতির বক্তব্য থেকে আমরা বুঝেছি যে, আপনাদের নিম্ন আদালত পুরো সরকারের নিয়ন্ত্রণে। সেখানে সরকার যে নির্দেশ দেয় বিচারকদের সেই নির্দেশ মেনে কাজ করতে হয়। এবং সে রায় দিতে হয়। যদি বিচারক দেখে যে বিচার প্রার্থী নিরপরাধ। তার সঙ্গে এ রকম করা ঠিক হবে না। ওই বিচারক যদি তার বিবেকমত রায় দেন তাহলে তাকে হয় চাকরিচ্যুত হতে হয় নয়ত দেশ ছাড়া হতে হয়। না হলে মামলা হামলা দিয়ে তার উপরে হয়রানি করা হয়’- বিচার ব্যবস্থা নিয়ে এই মূল্যায়ন করলেন বিএনপি নেত্রী।
সব বিচারকসহ দেশের সর্বস্তরের জনগণের জেগে উঠে সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আজকে ভয় পায় বিএনপির মত একটি দলকে। কারণ বিএনপি জনগনের ভোটে বার বার নির্বাচত হয়। এখনোও বিএনপি জনগণের ভোটে বিশ্বাস করে বলে আমরা বলেছি একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। যেখানে সবাই অংশগ্রহণ করবে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে। আমরাও তাদের মেনে নেব।