হাইকোর্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থীকে হাতকড়া পরানো অবস্থায় চিকিৎসা দেয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফের তলব করেছে । এছাড়া ওই দিন দায়িত্বরত এক উপপরিদর্শক ও দুই কনস্টেবলকেও আদালতে আসতে বলা বলা হয়েছে। আগামী ৫ জুন আদালতে উপস্থিত হয়ে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

বুধবার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে ওসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু।

ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ৩১ মে ওসিসহ চার পুলিশকে আদালতে তলব করেন। তলবের প্রেক্ষিতে আজ হাইকোর্টে হাজির হন আশুলিয়ার ওসি মহসিনুল কাদের। তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতকে জানান, ঘটনার সময় তিনি ওই জায়গায় দায়িত্বে ছিলেন না। মেডিকেল সেন্টারে তখন একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও দুইজন কনস্টেবল দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরে আদালত ওই এসআই ও দুই কনস্টেবলসহ ওসিকে আগামী ৫ জুন ফের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।

“হ্যান্ডক্যাপড টু হসপিটাল বেড” এ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন আহত হওয়ার পর তার বন্ধুরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করে। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে এনাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। যেখানে  হাসপাতালের বেডের সঙ্গে তার একহাতে হ্যান্ডকাপ পরানো হয়েছে। খাওয়ার সময় হ্যান্ডকাপ খুলে দিতে অনুরোধ করলেও পুলিশ তা খুলে দেয়নি। অসুস্থ অবস্থায় কাউকে হাতকড়া পরানো পুলিশ রেগুলেশন, বেঙ্গল এর ৩৩০ (এ) বিধানের লঙ্ঘন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

আইনজীবী রেজাউল করিম বলেন, প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে আশুলিয়া থানার ওসিকে তলব করেন। পাশাপাশি রুলও জারি করেছেন। রুলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতকড়া পরানো কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন। স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, ঢাকার পুলিশ সুপার ও আশুলিয়া থানার ওসিকে রুলের বিবাদী করা হয়েছে।

গত শুক্রবার ভোর পাঁচটায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আল বেরুনী হলের মার্কেটিং বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান রানা ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরাফাত নিহত হন। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত বিচারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে আন্দোলনকারী। পরে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ৪২ শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। এঘটনায় আহত হয় অনেকে। পরে অবশ্য ৪২ শিক্ষার্থীর জামিনও হয়।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031