ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে মানহানিকর বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের বিরুদ্ধে । রাজধানীর শাহবাগ থানা মামলা না নেয়ার পর অভিযোগকারীরা অভিযোগ নিয়ে যান আদালতে।
বুধবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রাব্বানি বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
ঢাকা মহানগর হাকিম এস এম মাসুদ জামান অভিযোগ আমলে নিয়ে আগামী ১৬ জুলাই ইমরান এইচ সরকারকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের সামনের ফোয়ারা থেকে ভাস্কর্য অপসারণের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ এনে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক ছাত্রলীগ নেতা। শিক্ষামন্ত্রীর জামাতার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানা মামলা না নেয়ার পর বাদী যান মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে।
বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম এস এম মাসুদ জামানের আদালতে মামলাটি করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রব্বানী। এর আগে ইমরাননের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের করা মিছিল থেকে তাকে ‘কুত্তার মত’ পেটানোর হুমকি দেয়া হয়।
২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে সর্বতভাবে সমর্থন দেয় ছাত্রলীগ। মঞ্চের কর্মসূচিতে দলবল নিয়ে অংশও নেয় তারা। তবে ওই বছরের ৫ মে রাজধানীতে হেফাজতে ইসলামের অবরোধ এবং শাপলা চত্বর তাণ্ডবের পর ছাত্রলীগ এই মঞ্চ থেকে সরে যায় এবং এর পরের ঘটনাপ্রবাহে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণের পর এই বিরোধ নতুন রূপ নিয়েছে। ধর্মভিত্তিক সংগঠনে হেফাজতে ইসলামের হুমকির মুখে গত ২৫ মে দিবাগত রাতে সুপ্রিম কোর্টের সামনের ফোয়ারার সামনে থেকে অপসারণ করা হয় ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে স্থাপিত ভাস্কর্যটি। দুই দিন পর এনেক্স ভবনের সামনে সেটি প্রতিস্থাপন করা হয়।
তবে ভাস্কর্য অপসারণের পর পর প্রগতিশীল শক্তির পক্ষ থেকে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। প্রতিবাদ জানায় যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে ২০১৩ সালে গড়ে উঠা আন্দোলন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরাও। শুক্রবার তারা রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় বিক্ষোভ করে।
ওই মিছিল থেকে প্রধানমন্ত্রীর নামে কটূক্তি করে স্লোগান দেয়া হয় বলে অভিযোগ এনে গত সোমবার রাতে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় মিছিল করে ছাত্রলীগ। ওই মিছিল থেকে ইমরানকে ‘কুত্তার মত’ পেটানোর স্লোগান দেয়া হয়।
আর মঙ্গলবার রাতে ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে ইমরান এইচ সরকার জানান, এই হুমকিকে তিনি আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তিনি লেখেন, ‘মোদ্দা কথা হচ্ছে কারো হুমকিতেই আমি ভীত নই। আমার জীবন সবসময়ই হুমকির মুখে- সেই হুমকি উগ্রবাদীদের নামে আসুক কি ছাত্রলীগের নেতার নাম হয়ে আসুক, তাতে হুমকির গুরুত্ব তো আর কমছে না!
ছাত্রলীগ তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে সেটাকে সত্যের অপলাপ বলে জানান ইমরান। তিনি লেখেন, ‘গণজাগরণ মঞ্চ কোনো নেতানেত্রীর বিরুদ্ধে কোনো বক্তৃতা বিবৃতিতে অশোভন ভাষা ব্যবহার করে না। জাতীয় নেতৃবৃন্দ তো দূরের কথা, কোনো বৈধ রাজনৈতিক দলের আঞ্চলিক অথবা মাঝারি সারির কোনো নেতার সম্পর্কে কথা বলার সময়ও আমরা অসৌজন্যমূলক কিছু বলি না।’