বলেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনো বেঁচে আছেন, দক্ষতার সাথে দেশ পরিচালনা করছেন, দেশের মানুষকে স্বপ্ন দেখাছেন, এসব আমার কাছে সবকিছু স্বপ্নের মতো মনে হয়’।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের আলোচনায় এ কথা বলেন আশরাফ।
১৯৭৫ সালে বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলামকে হত্যার পর আশরাফ নিজেও যুক্তরাজ্যে নির্বাসনে ছিলেন। আর ছয় বছর ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন শেখ হাসিনা।
এই বিষয়টির উল্লেখ করে আশরাফ বলেন, ‘পরবাসে থাকার যে যন্ত্রণা তা আমি বুঝি। এটা রিমান্ড থেকেও ভয়াবহ। সবাইকে হারিয়ে পরবাস জীবন শেষে অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দেশে এসেছিলেন। সেই থেকে আজ অবধি দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এখন সবার কাজ হবে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করা।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার আগে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা যান বিদেশে। বেলজিয়ামে থাকার সময়ই মর্মান্তিক এই ঘটনার খবর পান তিনি। নয় দিন পর ভারতে এসে পুরো ঘটনা জানেন তিনি। ভারতের সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি জানান, বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারও বেঁচে না থাকার কথা।
ছয় বছর পর শেখ হাসিনাকে সভাপতি নির্বাচিত করে আওয়ামী লীগ। আর ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি দেশে ফেরেন। তার দেশে ফেরার ৩৬ বছর পর এবারের দিনটিতে নানা আয়োজন রাখে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। এর একটি ছিল বিকালের আলোচনা সভা।
আলোচনায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যতদিন এই দেশে এই প্রকৃতি বেঁচে থাকবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো দক্ষতা ও সৃজনশীলতার জন্য শেখ হাসিনাও বেঁচে থাকবেন।’
বিএনপির প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘বিএনপি নাকি ভিশন ২০৩০ ঘোষণার পর অনেক চাঙ্গা হয়েছে। আমি মনে করি ভেতরে ভেতরে আরো ফাটল ধরেছে। তার প্রমাণ সারাদেশে বিএনপির ধাওয়া পালটা ধাওয়া দেখেই বোঝা যায়।’
‘তারা মনে করে বিএনপিকে ভাঙার জন্য আওয়ামী লীগ ইন্দন দিচ্ছে। কিন্তু তাদের দলের যে অবস্থা এতে ভাঙনের প্রয়োজন পড়ে না। তারা নিজেরাই ভেঙে পড়ে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নিজেদের ভেতরে ঐক্য নিয়ে কাজ করছে। ঐক্যই আওয়ামী লীগের শক্তি’ বলেন কাদের।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার প্রসংসা করে তাঁর দীর্ঘ জীবন কামনা করেন।
সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, ‘শেখ হাসিনা ৩ ঘণ্টার নেত্রী নন, তিনি ১৬ ঘণ্টার নেত্রী। তার সফলতা বলে শেষ করা যাবে না।’
নাট্যবক্তিত্ব মমতাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমি এত নাটক লিখেছি, অভিনয় করেছি, অনেক বই পড়েছি কিন্তু কোথাও শেখ হাসিনার মতো এমন স্নিগ্ধ, স্বচ্ছ, ধার্মিক, ত্যাগী মানুষ আমি দেখিনি।’
আওয়ামী লীগ নেতা মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মান্নান, মুকুল বোস, আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, মাহবুবুল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমান সোহাগ, এস এম জাকির হোসেন প্রমুখ এ সময় বক্তব্য রাখেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।