প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য এককভাবে চেষ্টা না করে এই অঞ্চলের প্রতিবেশী দেশগুলোকে নিয়েই আগানোর পরিকল্পনা করছেন । তিনি বলেছেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে যেসব সমস্যা আছে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সেগুলোর যে রকম সমাধান হবে, তেমনি সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে এক সঙ্গে।

শনিবার কক্সবাজার সফরে গিয়ে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

এই অনুষ্ঠানে স্থানীয় উন্নয়নের নেয়া বিভিন্ন প্রকল্পের পাশাপাশি ভবিষ্যত পরিকল্পনাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে গোটা দেশের উন্নয়নে তার চিন্তার কথা জানান। তুলে ধরেন বাংলাদেশকে প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্বের, উত্তর ও দক্ষিণের সঙ্গে যোগাযোগের সেতুবন্ধন করার বাসনার কথা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ভৌগলিক অবস্থানটা এমন একটা জায়গায়, এই বাংলাদেশকে যদি আমরা সেভাবে গড়ে তুলি, তাহলে বিশ্বে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা অবস্থান করে নিতে পারে। প্রাচ্য-পাশ্চাত্য এবং উত্তর-দক্ষিণ-দুই দিক থেকেই সেতুবন্ধনটা হতে পারে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্বের মধ্যে যে ব্রিজ হতে পারে, এটা হতে পারে বাংলাদেশ।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির জনক সব সময় বলতেন বাংলাদেশকে আমরা প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলবো। অর্থাৎ এক দিকে শান্তিপূর্ণ দেশ হবে অন্যদিকে ভৌগলিক অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের গুরুত্ব অপরিসীম, সেটাও আমরা প্রতিষ্ঠিত করবো।’

চলতি বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে শুক্রবার উৎক্ষেপিত সাউথ এশিয়া স্যাটেলাইট নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ভারত, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ- সাউথ এশিয়ার এই সাত দেশ মিলে ইতোমধ্যে একটি স্যাটেলাইটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এখানে যে সুবিধা হবে জলবায়ু পরিবর্তনের দেশ আমাদের। এখানে ঝড়-ঝঞ্ছাট, ঘুর্ণিঝড় যে কোনো সময় আসে। এই আবহাওয়ার সম্পর্কে দ্রুত তথ্য সরবরাহ করা বা আর্থসামাজিক উন্নয়নে এটা অনেক বড় অবদান রাখতে পারে।

‘কাজেই রিজিওনাল কো অপারেশন অর্থাৎ আঞ্চলিক সহযোগিতাকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দেই’ বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, মিয়ানমার, আমরা যৌথভাবে এই চারটি দেশ মিলে ইকোমোমিক করিডর, অর্থাৎ কানেকটিভিটির ব্যবস্থা করেছি। এতে রাস্তাঘাট যেমন উন্নত হবে, ব্যবসা বাণিজ্য আরও সম্প্রসারিত হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ইন্ডিয়া-এই চার দেশ মিলে আমরা বিবিআইএন চুক্তি সাক্ষর করেছি। সেখানে আমাদের বিরাট একটা ব্যবসা-বাণিজ্যের সূচনা হবে। পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধি পাবে, আমাদের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে কেউ একা চলতে পারে না। সবাইকে নিয়েই চলতে হয়। এবং আমাদের একটাই লক্ষ্য, আমাদের প্রতিবেশী দেশ, তাদের সাথে হয়ত সমস্যা থাকতে পারে, আলোচনার মাধ্যমে সেসব সমস্যা সমাধান যেমন করব, সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক সঙ্গে কাজ করবো। কোথায় কোথায় আমরা একসাথে কাজ করতে পারি, সেটা নির্দিষ্ট করে আমরা দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031