উত্তপ্ত দুপুরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় ফুটপাতের ধুলোবালিতে জড়োসড়ো শুয়ে আছে দশ বছরের পথশিশুটি। তার দুই পাশ ঘেঁষে যাতায়াত করছে ব্যস্ত পথচারীরা। রুক্ষ, শুষ্ক ও ধূলিজমা চুল। মুখ ও শরীরে ছোট-বড় বেশ কিছু ক্ষতচিহ্ন। পরনে মেরুন রঙের পাজামা ছাড়া পুরো শরীর খালি।
এমন অনেক শিশুরই দেখা মিলবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায়। ওদের কেউ প্লাস্টিকের বোতল ও কাগজ কুড়ায়; কেউবা দর্শনার্থীদের পিছু পিছু ছুটে ফুল, পানি ও পপকর্ন বিক্রি করে; কেউ আবার ভিক্ষাবৃত্তি কিংবা মাদক বিক্রিসহ নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত।
কথা হয় ফুটপাতে শুয়ে থাকা আছমা নামের এক পথশিশুর সাথে। ঢাকাটাইমসকে মেয়েটি বলে, ‘হারা দিন এহানে (স্মৃতি সৌধ এলাকায়) খালি বোতল টোকাইছি। এ্যাহন শরীলডা ম্যাচম্যাচ করতাছে, তাই ফুটপাতে কাপড় বিছায় হুইয়া পড়ছি। তাও কত্তজনে লাথি মাইরা চইলা যায়। হ্যার পরেও লাথি খাইয়া হুইয়া থাকি। কী আর করমু? আমাগো আর আরাম নেওয়ার জাগা কই?’
স্মৃতিসৌধের ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল নয় বছর বয়সী শাওন নামের একটি ছেলেকে ভিক্ষাবৃত্তি করতে। লেমেনেটিং করে সাহায্যের আবেদন লাগিয়ে ভিক্ষা করে সে। যেখানে শাওন ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত বলে চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন চাওয়া হয়েছে।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাওনের এধরনের কোনো রোগ নেই। তার মা নিজেই ভিক্ষাবৃত্তি করান।
সৌধ এলাকায় এলোমেলো চলাফেরা সাজু, কালাম ও মায়াসহ বেশ কয়েক পথ শিশুর। ওরা জানায়, স্মৃতিসৌধ এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে বোতল টোকায় ওরা। প্রতিদিন কুড়ানো বোতল বিক্রি করে যে টাকা পায় তা দিয়ে দুই বেলা পেটপুরে খাওয়া হয় না। তাই মাঝেমধ্যে ভিক্ষা করতে হয়।
এছাড়া সৌধ এলাকার অনেক ছিন্নমূল শিশুকে দিয়ে মাদক বিক্রি করানোসহ নানা অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত করছে একটি চক্র। যার মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে।