অকালবন্যায় সব ফসল ভেসে যাওয়ার পর বিস্তীর্ণ হাওরবাসীর পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকার দাবি জানানো হলেও ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি দাবি করেছেন, আইন অনুযায়ী কোনো এলাকাকে ‘দুর্গত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করতে হলে সেখানকার অর্ধেক জনসংখ্যা মারা যেতে হবে, মহামারী দেখা দিতে হবে।

গত বুধবার সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামালের এ বক্তব্যে স্থানীয় মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ সময় সেখানে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম উপস্থিত ছিলেন।

এই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সুনামগঞ্জে বিভিন্ন সংগঠন সচিবের অপসারণ দাবি করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। জাতীয়ভাবেও এই বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। যদিও সচিব দাবি করেছেন, তাঁর বক্তব্য বিকৃতভাবে পরিবেশন করা হয়েছে।

সেই সভায় সচিব মো. শাহ কামাল বলেছিলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় একটি আইন আছে, এই আইনের ২২ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো এলাকাকে দুর্গত ঘোষণা করতে হলে, প্রথমে সেখানে খাদ্য সংকট দেখা দিতে হবে এবং দেশে কোনো খাদ্য থাকবে না, খাদ্যগুদাম খালি থাকবে। এখানে সাত হাজার মেট্রিক টন চাল এখনো মজুদ আছে।’

‘তাহলে এই কথাবার্তাগুলো যাঁরা বলেন, তাঁরা প্রথমে দেশটাকে ভালোবাসেন। দেশকে খাটো করে, নিজের এলাকাকে খাটো করে যে রাজনীতিবিদরা বলেন, তাঁরাও ঠিক বলেন না। প্রথম দেশের প্রতি শ্রদ্ধা লাগবে, ভালোবাসা লাগবে। এই সস্তা দামের কথা যেন আমরা না বলি।’

সচিব আরো বলেন, ‘এটা করতে হলে অর্ধেকের ওপর জনসংখ্যা মরে যাওয়ার পরে কিন্তু এটা (দুর্গত এলাকা) সৃষ্টি হবে। যে খাদ্য নাই, অজ্ঞাত কর্মে মহামারী আকার ধারণ করতে হবে। তারপরে আন্তর্জাতিক সংস্থা এসে এখানে ফিল্ড করবে। তারপরে সেটাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করার পর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আদার কান্ট্রিগুলোর প্রতি আহ্বান জানালে যে, এদের বাঁচাও। যেটা এখন সোমালিয়া, ইথিওপিয়াতে হচ্ছে।  এইটা আমরা এখানে না বলি। আল্লাহ আমাদের এই গজব দেয় নাই, দেবেও না।’

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031