ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম সর্বোচ্চ আদালতের সামনে স্থাপিত গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য অপসারণ না করলে ঈদুল ফিতরের পর সুপ্রিমকোর্ট ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছেন।

মূর্তি অপসারণের দাবিতে তিনি কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর মধ্যে রয়েছে- রমজান মাসের আগে মূর্তি অপসারণ করা না কলে ১৭ রমজান দেশব্যাপী জেলায় জেলায় বিক্ষোভ, তারপরও মূর্তি সরানো না হলে রমজানের পর এই দাবিতে সুপ্রিমকোর্ট ঘেরাও করা হবে।

কর্মসূচি ঘোষণা করে সরকারের উদ্দেশ্যে চরমোনাই পীর বলেন, ‘দেশের মুসলিম জনতা রক্ত দিয়ে হলেও মূর্তি অপসারণের আন্দোলন সফল করবে। অবিলম্বে মূর্তি অপসারণের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় রমজানে সারা দেশের মুসলমানরা ফুঁসে উঠবে।’

শুক্রবার বিকালে রাজধানীতে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক মূর্তি অপসারণের দাবিতে আয়োজিত জাতীয় মহাসমাবেশে এসব কথা বলেন সৈয়দ রেজাউল করিম।

চরমোনাই পীর বলেন, ‘গত ১১ এপ্রিল গণভবনে দেশের শীর্ষ আলেমদের সামনে প্রধানমন্ত্রী ওয়াদা করেছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে মূর্তি অপসারণের উদ্যোগ নেবেন। আমরা ভেবেছিলাম প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার দ্রুত প্রতিফলন ঘটবে। এনিয়ে আমাদের আর আন্দোলন করতে হবে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর মূর্তিপ্রেমী ইসলামবিদ্বেষী একটি মহল উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে। তারা দেশের আলেম-ওলামাদেরকে অশালীন ভাষায় গালি-গালাজ করছে। ইনু, মেনন, মাইনুদ্দীন খান বাদলরা জাতীয় সংসদের সদস্য হওয়াটা দেশবাসীর জন্য লজ্জার বিষয়। আমরা আশা করবো আগামীতে এ জাতীয় ইসলামবিদ্বেষী ও বিতর্কিত লোকদের কাছে আওয়ামী লীগ তাদের নৌকা ভাড়া দেবে না।’

চরমোনাই পীর বলেন, ‘আজ আমরা আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে শঙ্কিত। আমাদের ঈমান, ধর্ম-বিশ্বাস এবং আমাদের স্বকীয় সংস্কৃতির ওপর আজ জাতীয়ভাবে আঘাত করা হয়েছে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সু্প্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এবং জাতীয় ঈদগাহের পাশে গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপন করে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম নাগরিকদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া হয়েছে। আমরা আজ জানতে চাই সু্প্রিম কোর্টের মতো একটি জাতীয় ও সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সামনে কার সিদ্ধান্তে জাতীয় চেতনাবিরোধী এই মূর্তি স্থাপন করা হলো।’

প্রধান বিচারপতির অপসারণ দাবি

চরমোনাই পীর বলেন, ‘এদেশের হিন্দু সম্প্রদায় মূর্তি পূজা করে। কিন্তু কোনো হিন্দু গ্রিক দেবীর পূজা করে না। দেশের হ্দিু সম্প্রদায়ের কেউ মূর্তি স্থাপনের দাবি করেছে বলেও আমাদের জানা নেই। প্রধান বিচারপতির যদি গ্রিক দেবীর প্রতি কোনো ভক্তি বা অনুরাগ থেকে থাকে তাহলে এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। তিনি তার ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দকে জাতীয়ভাবে চাপিয়ে দিতে পারেন না। মূর্তিভক্ত প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সুপ্রিম কোর্টের সামনে এবং জাতীয় ঈদগাহের পাশে মূর্তি স্থাপনের সিদ্ধান্ত দিয়ে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন।’

রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি দেশের সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তিনি গণমানুষের আস্থা এবং নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন। একজন বিতর্কিত ও অবিবেচক ব্যক্তি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির আসনে থাকতে পারেন না। আমরা বিতর্কিত বিচারপতি এস কে সিনহার দ্রুত অপসারণ চাই।’

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031