বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে তলব করেছে ঢাকার একটি আদালত মুক্তিযুদ্ধের সময় খুনি বাহিনী আলবদরের দুই নেতাকে মন্ত্রিত্ব দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মানহানির অভিযোগে করা মামলায়  । ১১ জুন আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাকে।

২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে করা এক মামলায় পুলিশ প্রতিবেদন দেয়ার পর ঢাকা মহানগর হাকিম নূর নবী খালেদাকে তলব করেন। তিনি ওই নির্দেশ দেন গত ২২ মার্চ। আজ বৃহস্পতিবার তা জানাজানি হয়।

এর আগে এই মামলায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৮ নং মহানগর হাকিমের আদালতে প্রতিবেদন দেন তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি এম মশিউর রহমান।

২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি করেন করেন জননেত্রী পরিষদ নামে একটি সংগঠনের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। মামলায় খালেদা জিয়া ও তার প্রয়াত স্বামী জিয়াউর রহমানকে আসামি করা হয়।

এতে বলা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বর ক্ষমতা দখল করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছেন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসলে তাকে হুমকি তার বাবার বাড়িতে পর্যন্ত ঢুকতে দেয়া হয়নি।

এ ছাড়া খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে স্বাধীনতাবিরোধী আলবদর রাজাকারদের হাতে মন্ত্রিত্ব তুলে দেন। স্বীকৃত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটিয়েছেন তিনি।

মামলাটি দায়েরের পর এ বিষয়ে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রতিবেদন চায় পুলিশ। থানার পক্ষ থেকে জমা দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির জয়ের পর চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সরকার গঠন করেন। এতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের দোসর জামায়াতের দুই নেতাকে তিনি মন্ত্রী বানান। এমপিও হন কেউ কেউ। পরে এদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন।

এদের মধ্যে খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী এবং আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মুত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে মন্তব্য করে প্রতিবেদকে বলা হয়, তারা ক্ষমতায় থাকাকালে মন্ত্রিত্বের সুবিধা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকা তাদের বাড়ি এবং গাড়িতে ব্যবহার করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন স্বাধীনতাবিরোধীদের তার মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়ে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকার মর্যাদাকে ভুলন্ঠিত করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

প্রচলিত আইনে মৃত ব্যক্তির বিচারের সুযোগ না থাকায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে একই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031