প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত ভাস্কর্য নিয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু মন্ত্রিসভার বৈঠকে তুলে ধরেছেন। তিনি জানান, ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে স্থাপিত গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলতে অথবা জাতীয় ঈদগাহ থেকে যেন দেখা যায় না, এমন ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন তিনি।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রসঙ্গটি উঠলে প্রধানমন্ত্রী নিজেই এ কথা জানান। বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক মন্ত্রী বিষয়টি ঢাকাটাইমসকে নিশ্চিত করেছেন।
গত ১০ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের চেয়ারম্যান আহমেদ শাহ শফীর নেতৃত্বে কওমি মাদ্রাসার শীর্ষ আলেম ওলামারা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময়ে অংশ নেন। এই বৈঠকে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সনদ দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স ইন ইসলামিক স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যারাবিকের সমমান দেয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত ভাস্কর্য অপসারণে দাবি জানিয়ে আসা আলেম ওলামাদেরকে এই বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেন।
গত শনিবার বিচারপতিদের বাসভবন উদ্বোধন উপলক্ষে কাকরাইল গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ছিলেন প্রধান বিচারপতিও। সেখানে এই অনুষ্ঠানের পর তার সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রিসভায় অংশ নেয়া একাধিক মন্ত্রী নিশ্চিত করেন যে, সুপ্রিম কোর্টের সামনে ভাস্কর্য বিষয়ে আলোচনা তোলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। এরপর একই বিষয়ে কথা বলেন আরও দুই এক জন মন্ত্রী। পরে আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীও।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনও ধরনের আলোচনা ছাড়াই হাইকোর্ট-সুপ্রিমকোর্টের সামনে একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। এটি আসলেই দর্শনীয় কোনও ভাস্কর্য হয়নি। আর এটি এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যে জাতীয় ঈদগাহ থেকেও চোখে পড়ে।
এই বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কী কথা হয়েছে সেটিও জানান প্রধানমন্ত্রী। একজন মন্ত্রী নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি গত শনিবার জাজেস কমপ্লেক্স উদ্বোধনের পর প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এ বিষয়ে একান্তে কথা বলেছেন। তাকে জানিয়েছণে, ভাস্কর্যটি দর্শনীয় হয়নি। এটি নিয়ে বিতর্কও উঠেছে। এটি তিনি যেন আদালত প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে ফেলেন অথবা এমনভাবে রিপ্লেস (স্থানান্তর) করেন বা ঢেকে দিন যাতে এটি জাতীয় ঈদগাহ থেকে দেখা না যায়।’
প্রধান বিচারপতি প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে কী বলেছেন, এমন প্রশ্ন করলে ওই মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে জানিয়েছেন।’