শিক্ষা মন্ত্রণালয় কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ ডিগ্রি দাওরায়ে হাদিসকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির মর্যাদা দিলেও এর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে তা নিয়ে অন্ধকারে । কর্মকর্তারা বলছেন, মাস্টার্স ডিগ্রির স্বীকৃতি দিলে এর নিচের স্তরের ডিগ্রিগুলোর স্বীকৃতির দিতে হবে। কিন্তু এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি তাদেরকে।

গত ১০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী গণভবনে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও হেফাজতে ইসলামের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স ইন ইসলামিক স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যারাবিক এর মর্যাদা দেয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার দুই দিন পর গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে জানানো হয়, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সভাপতি (পদাধিকার বলে) আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। মিটি সিলেবাস প্রণয়ন, পরীক্ষা পদ্ধতি, পরীক্ষার সময় নির্ধারণ, অভিন্ন প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়ন, ফলাফল ও সনদ তৈরিসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এক বা একাধিক উপকমিটি গঠন করতে পারবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়গুলো অবহিত করবে কমিটি।

তবে এই প্রজ্ঞাপন জারির পরও কিছু বিষয়ের সুরাহা হয়নি। কারণ মাস্টার্স ভর্তি হতে হলে স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হয়। আবার স্নাতক ভর্তি হতে হলে উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমান ডিগ্রি লাগে। এই পর্যায়ে ভর্তি হতে হলে আবার লাগবে এসএসসি বা সমমানের ডিগ্রি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সর্বোচ্চ ডিগ্রিকে স্বীকৃতি দেয়া হলেও এর আগেরগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত, তা আমাদেরকে জানানো হয়নি। এসব বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত তা আমাদের জানানো হয়নি।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা শাখার প্রধান অতিরিক্ত সচিব জাকির হোসেন ভুইয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিষয়টি অস্পষ্ট। আমরা এখনো এটি বুঝিনি। আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনাও আসেনি। আমরা বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করছি। তবে এটি দেখবে বিশ্ববিদ্যালয় উইং।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সচিব বেলায়েত হোসেন তালুকদার এ বিষয়ে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের কাছে লিখিত কোনো আদেশ বা অনুশাসন আসেনি। আসলে বিষয়টি সম্পর্কে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের এক পদস্থ কর্মকর্তা  বলেন, ‘কীভাবে একজন কওমি আলেম মাস্টার্সের সমমান পাবে, সেটি কিন্তু দুর্বোধ্য বিষয়। এটিকে সাধারণের সঙ্গে রিলেট করে চূড়ান্ত করা হলে মামলা-মোকদ্দমাও হতে পারে।’

এই স্বীকৃতির প্রভাব কী? জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এই স্বীকৃতির ফলে স্নাতকোত্তর পাস করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একই চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন তাঁরা। এত দিন স্বতন্ত্র ধারার এই শিক্ষার কোনো দামই ছিল না চাকরির বাজারে।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031