বেগম খালেদা জিয়া বিএনপি চেয়ারপারসন দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে   দেশের মানুষের দুঃখ-দুদর্শা দূর করে জনগণের কল্যাণে কাজ করার শপথ করেছেন।

শুক্রবার বিকালে দলের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে খালেদা জিয়া নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আজকে প্রয়োজন ঐক্যের, প্রয়োজন শান্তির, প্রয়োজন কল্যাণের। আসুন বাংলা নতুন বছরে আমরা আজকে শপথ করি, দেশের মানুষের দুঃখ-দুদর্শা দূর করবো এবং জনগণের কল্যাণ করবো।’

নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বঙ্গাব্দ ১৪২৪ বরণ করতে ‘জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস’এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

দেশের মানুষ কষ্টে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগের যে বৃষ্টি ও বাইরে থেকে পানি এসে আমাদের হাওর অঞ্চলের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। সেজন্য গরিব কৃষকদের পাশে গিয়ে আমাদের দাঁড়াতে হবে। তাদের সাহায্য করতে হবে তারা যেন এই দুযোর্গ কাটিয়ে উঠতে পারে।’

‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপের’বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারিও দেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবস্থা দেখে অনেকে এগিয়ে আসতে চায়, অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার জন্য এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের নামে দেশের অভ্যন্তরে ঢুকে দেশকে দুর্বল করার জন্য। বাংলাদেশে যখন আট কোটি লোক ছিল, তখন নিজেরা ঐক্যবদ্ধভাবে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। আজকে ১৬ থেকে ১৭ কোটি লোক ঐক্যবদ্ধ, তাদের কারোর সাহায্যের প্রয়োজন নাই।

বিএনপি চেয়ারপারসন আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমরা সবাইকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, কিন্তু কেউ যদি আমাদের বন্ধু হয়ে প্রভু হতে চায়, সেটা আমরা কখনো মেনে নেবো না, মানবো না। কারো প্রভুত্ব বাংলাদেশের মানুষ স্বীকার করবে না।

খালেদা বলেন, ‘বিএনপি সব সময় জনগণের কল্যাণ ও জাতীয় ঐক্যের বিশ্বাস করে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব। আমরা দেশ থেকে সন্ত্রাস, গুম-খুন-হত্যা ও জঙ্গি হামলা বিদায় করে শান্তি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করব বলেও মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপিপ্রধান বলেন, ‘স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী’ শেখ হাসিনা  ভারতে বেড়িয়ে এসেছেন কিন্তু নিজের দেশের মানুষের স্বার্থের কথা, নিজের দেশের মানুষের অধিকারের কথা বলতে পারেননি, কিছু করতে পারেননি।

চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, যদি তিনি (শেখ হাসিনা) সাহস করে শুধু একটা কথা বলতেই পারতেন, … তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দেন, তাহলে আমি সমঝোতা করবো, তা না হলে করবো না। এটা বললে আমরা সবাই তার পাশে থেকে সাহস ও সমর্থন জানাতাম।’

অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভীও বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে জাসাস শিল্পীরা ভাটিয়ালী, দেশাত্মবোধক ও বাউল গান পরিবেশন করেন। খালেদা জিয়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করে বিকাল সাড়ে ৫টায় গুলশানের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

জাসাস সভাপতি অধ্যাপক মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক চিত্র নায়ক হেলাল খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তরিকুল ইসলাম, মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মোহাম্মদ শাহজাহান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আতাউর রহমান ঢালী, খায়রুল কবীর খোকন, হাবিবউন নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, নুরী আরা সাফা, আজিজুল বারী হেলাল, আমিনুল হক, হেলেন জেরিন খান, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, তাইফুল ইসলাম টিপু, নিপুন রায় চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের জুয়েল, রাজীব আহসান উপস্থিত ছিলেন।

জাসাস নেতা চিত্র নায়ক আশরাফউদ্দিন উজ্জ্বল, বাবুল আহমেদ, শায়রুল কবির খান, মনিরুজ্জামান মুনির, আহসান উল্লাহ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন ভুঁইয়া শিশির, সানাউল হক ও সিবা সানুও ছিলেন।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031