আদালতে এখনো বিচার শুরু হয়নি বর্ষবরণে যৌন হয়রানির ঘটনায় করা মামলায় পুলিশ মো. কামাল নামে একজনের বিরুদ্ধেআদালতে অভিযোগপত্র দিলেও এখনো বিচার শুরু হয়নি। মামলাটিতে ঢাকার ৩ নম্বর নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে গত ১৬ জানুয়ারি, ১৮ ফেব্রুয়ারি এবং এবং ৭ মার্চ অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণের শুনানির জন্য দিন ধার্য হলেও রাষ্ট্রপক্ষ সময় নেওয়ায় তা হয়নি। ফলে আগামী ২ মে অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণের শুনানির জন্যই দিন ধার্য আছে।

এ সম্পর্কে ওই ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদা আক্তার বলেন, আমরা অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সময় নিয়েছি। আশা করছি আগামী ২ মে অভিযোগপত্র আমলে নেওয়া হবে এবং এরপর বিচার শুরু হবে।

২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর পিবিআইয়ের পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক ঢাকা সিএমএম আদালতে মামলাটিতে অভিযোগপত্র দেন। এরপর চলতি বছর ২ জানুয়ারি মামলার নথি বিচারিক আদালত ঢাকার ৩ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আসে।

২০১৫ সালের পয়লা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কয়েকজন নারীকে যৌন হয়রানির এই মামলায় আট আসামিকে শনাক্ত করেছিল পুলিশ। তাদের ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আসামিদের নাম-ঠিকানা না পাওয়ার অযুহাতে ২০১৫ সালের ২২ ডিসেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদনও গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল। পরে শনাক্ত করা আসামিদের মধ্যে মো. কামাল গ্রেপ্তার হলে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মামলাটি পুনঃতদন্তের আবেদন করা হয়।

২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার তিন নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন।

অধিকতর তদন্তের অভিযোগপত্রে ৩৪ জনকে সাক্ষী করে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, মামলাটি তদন্তকালে একাধিকবার ঘটনাস্থল গিয়ে প্রত্যক্ষ সাক্ষি, ভিকটিমদের সন্ধান এবং আসামিদের সন্ধান ও গ্রেপ্তারের সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়। কামাল ব্যতিত অন্য আসামিদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। আট আসামির জন্য এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণার প্রেক্ষিতে, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় মিডিয়ায় প্রচার করা সত্ত্বেও  আসামিদের নাম-ঠিকানা ও সন্ধান পাওয়া যায়নি। বাকি সাতজনের সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হবে।

অধিকতর তদন্তের সাক্ষি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি লিটন নন্দির জবানবন্দিতে ওই দিনের যৌন হয়রানির ঘটনা সম্পর্কে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৫টা থেকে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উপস্থিত ছিলেন। ওইদিন সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে দেখতে পাই পাঁচ গ্রুপে বখাটেরা নারীদের লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করছে। প্রতিহত করার জন্য আমিসহ আমার সঙ্গীরা এগিয়ে যাই। রাজু ভাস্কর্যের পূর্ব পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ৩ নং গেটের সামনের রাস্তার উপর একটি মেয়ের শাড়ি বখাটেরা খুলে ফেলে এবং ব্লাউজ ছিড়ে ফেলে। তখন আমরা বখাটেদের কিলঘুষি মেরে তাড়িয়ে দেই। মেয়েটিকে শরীর ঢাকার জন্য আমার পাঞ্জাবি খুলে দেই। এভাবে বিচ্ছিন্নভাবে বখাটেরা মেয়েদের যৌন হয়রানি করেন।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031