বৃহস্পতিবার রাজধানীর বকশিবাজারে আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে বিচারকের প্রতি ‘অনাস্থা’ জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারক কামরুল আহসান মোল্লার প্রতি জানিয়েছেন ‘অনাস্থা’ মামলাটির অন্যতম আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ।
পরে বিচারক কামরুল আহসান মোল্লা আবেদন নাকচ করে মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ২৭ এপ্রিল নতুন তারিখ ধার্য করেন।
শুনানির শুরুর সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার আদালতকে বলেন,‘এই মামলায় যখন অভিযোগ গঠন করা হয় তখন আপনি (বিচারক) দুর্নীতি দমন কমিশনের ডিজি (মহাপরিচালক) ছিলেন। মামলাটি করেছেও দুদক। তাই এ মামলার শুনানির এখতিয়ার আপনার নাই। এখানে শুনানি হলে ন্যায়বিচার হবে না। তাই এ মামলার আদালত পরিবর্তন প্রয়োজন। খালেদা জিয়া আপনার প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন। তাই মামলা পরিবর্তনের আদেশ দেন।’
পরে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, ‘আপনি এ মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন। কারণ এ সংক্রান্ত ক্ষমতা উচ্চ আদালত আপনাকে দিয়েছে।’
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক খালেদা জিয়ার পক্ষে করা আবেদনটি গ্রহণ করে হাইকোর্ট থেকে এ বিষয়ে আদেশ আনার জন্য ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেধে দেন।
পরে দুদকের আইনজীবী বলেন,খালেদা জিয়ার পক্ষে করা আবেদনটি আদালতের প্রতি অনাস্থারই শামিল।
অন্যদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, সরাসরি বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানানো হয়েছে এটা বলা যায় না।আমরা বিচারককে জানিয়ে দিয়েছি আপনার বিচারকাজ করা ঠিক হবে না। যেহেতু আপনিও দুদকে ছিলেন,মামলাও দুদক করেছে।
তবে খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ্য আইনজীবী আব্দুর রেজাক খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছি।’ এরপর বিচারক মামলা ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতবি করেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশীদ।
২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী (পলাতক) ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান (পলাতক)।