বাংলাদশে যাত্রী কল্যাণ সমিতি প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনে যাত্রীস্বার্থ উপেক্ষিত বলে দাবি করেছে । সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেছেন, ‘মন্ত্রী সভায় অনুমোদিত আইনের খসড়ায়ও পুরানো আইনের মতো সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফোরামসমূহে শুধু মালিক শ্রমিকদের রাখা হয়েছে। তাই এই আইনে যাত্রীস্বার্থ চরমভাবে উপেক্ষিত হয়েছে।’
বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭ এ যাত্রী স্বার্থ সংরক্ষণ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন তিনি।
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সরকারের সড়ক যোগাযোগ সেক্টরে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফোরামসমূহে প্রভাব বিস্তারের কারণে জনস্বাথের্র সিদ্ধান্ত উপেক্ষিত হয়ে মালিক শ্রমিকের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়। এর থেকে উত্তোরণ ঘটিয়ে জনস্বার্থ সংরক্ষণের কোনো দিকনির্দেশনা এই আইনে প্রতিফলিত হয়নি।’
সড়ক যোগাযোগ সেক্টরে আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ না করায় শ্রমিকরা আজ বেপরোয়া মন্তব্য করে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সরকার জনস্বার্থে বা যাত্রী সাধারণের স্বার্থে বা সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে কোনো সিদ্ধান্ত নিলেই মালিক শ্রমিকরা পরিবহন ধর্মঘটের নামে দেশবাসীকে জিম্মি করছে। একাধিক মালিক শ্রমিকনেতারা সরকারি নীতি নির্ধারণী জায়গায়। অথচ এই সেক্টরে আইন যারা প্রয়োগ করবে যেমন বিআরটিএ চেয়ারম্যান, ডিআইজি হাইওয়ে, ডিসি ট্রাফিকদের পদমর্যাদা বা আইন প্রয়োগের ক্ষমতার চেয়েও মালিক শ্রমিকনেতারা অধিক ক্ষমতাধর। এ কারণে আইনের প্রয়োগ সঠিকভাবে হয় না।’
সড়ক যোগাযোগে জনবলের স্বল্পতা রয়েছে উল্লেখ করে যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, ‘বিআরটিএ মাঠ পর্যায়ে জনবল রয়েছে মাত্র পাঁচ শতাধিক। এর বিপরীতে বাংলাদেশে বর্তমানে বৈধ-অবৈধ মিলে যানবাহনের সংখ্য প্রায় ৪০ লাখ। এতে দেখা যায় প্রতি একজন কর্মকর্তার পক্ষে আট হাজার যানবাহন কেবল মনিটরিং নয় গণনা করাও কোনোভাবে সক্ষম নয়। অন্যদিকে দেশে সড়কে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বরত ২১ শত হাইওয়ে পুলিশ পাহারা দিচ্ছে ২১ হাজার কিলোমিটার মহাসড়ক। প্রতি ১০ কিলোমিটারে একজন পুলিশের পক্ষে আইন প্রয়োগ করা কোনোভাবে সক্ষম নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সাবেক যোগাযোগ সচিব ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইন যেটা করা হয়েছে সেখানে যাত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে কথা কম বলা হয়েছে। আইনের খসড়ায় শাস্তির পরিমাণ কম করা হয়েছে। আর যে শাস্তি হবে তা দেয়া সহজ হবে কি না, সহজ হবে না। কিভাবে দ্রুত শাস্তির বিধান করা যায় তা এই আইনে নাই। মহিলা যাত্রী কিভাবে নিরাপদ থাকবে সেটা এ আইনে নাই। সবার মতামত নিয়ে কাজ করলে অনেক ভালো হবে।’