প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকে পানি আসবেই-নিশ্চয়তা দিয়েছেন । তিনি বলেন, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি না হওয়ায় বিএনপি সমালোচনা করলেও, তারা ক্ষমতায় থাকাকালে উজানে গজলডোবায় ব্যারাজ নির্মাণের সময় কিছুই বলেননি, কোনো বাধাও দেননি।
ভারত সফর থেকে ফিরে মঙ্গলবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তার চার দিনের ভারত সফরে ১১টি চুক্তি ও ২৪টি সমঝোতা স্মারকের বিষয়ে যত না আলোচনা, তার চেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে।
প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার পরের সংবাদ সম্মেলনেও এই চুক্তি না হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় তাকে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভাটি অঞ্চলের, এখানে পানি আসবেই। পানি কেউ আটকে রাখতে পারবে না।’
২০১১ সাল থেকে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি আটকে আছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরোধিতার কারণে। মমতা বলছেন, বাংলাদেশকে তিনি পানি দিতেই চান, কিন্তু তিস্তায় সেই পানি আসেই না।’
পশ্চিমবঙ্গে তিস্তায় পানি কম আসছে-এটা মানছেন প্রধানমন্ত্রীও। তিনি বলেন, ওজানে গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে নেয়াই এর কারণ। শেখ হাসিনা বলেন, ‘গজলডোবায় যখন বাঁধ করা হয় তখন যারা ক্ষমতায় ছিল প্রতিবাদ করে নাই। তখন কেন তারা কথা বলেন নাই? এর পরিকল্পনা তো অনেক আগেরই ছিল। কিন্তু কোন সরকারই প্রতিবাদ করেন নাই। আজ যারা বড় গলায় প্রতিবাদ করছে তারা টু-শব্দও করেন নাই তখন।’
গজলডোবা বাঁধ নির্মাণের সময় বাধা না দিয়ে লালমনিরহাটে তিস্তা ব্যারাজ নির্মাণও একটি ভুল পরিকল্পনা বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বলা হয়েছিল পানি নিয়ে ভারতকে একটা শিক্ষা দেয়া হবে। কিন্তু এর ফলাফল আমরা ভোগ করছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিস্তা চুক্তি নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। মমতা ব্যানার্জী যখন বাংলাদেশে এসেছিল তখন তার সাখে আলোচনা করেছিলাম। বলেছিলেন পানি তিনি দেবেন। এবারও তিনি একেবারে না করে দেন নাই। তিনি বলেছেন, আশেপাশের যে কয়েকটা নদী আছে সেগুলোর সাথে সংযোগ করেই পানি দেয়া ব্যবস্থা করা কথা বলেছেন। এ সম্ভব্যতা যাচাইয়ের বিষয়েও তিনি বলেছেন। কাজেই এতে একটি দীর্ঘসূত্রয়ায় পড়ে যাবে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী স্পষ্টভাবে বলছেন তিস্তা চুক্তি হবেই আমরা ক্ষমতাই থাকতেই। তিনি যে ঘোষণা দিয়েছেন এটাতে আমরা ধৈর্য ধরতেই পারি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন তিস্তা নদী, ব্রহ্মপুত্রকে ড্রেজিং করা। যাতে বর্ষাকালে যে পানি আসে তা আমরা ধারণ করে রাখতে পারি। আমাদের নিজস্ব পদক্ষেপ আমাদের নিতে হবে, যা আমি বিশ্বাস করি। পানি দাও, পানি দাও বলে চিৎকার করে না। যেহেতু পানি তাদের ছাড়তেই হবে তাই আমাদেরও পানি ধরে রাখার ব্যবস্থাটা করবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিস্তা নিয়ে অনেক কথাই উঠছে, আমি ঠাট্টা করে বলেছি, ‘দিদিমণি (মমতা) তো আমাদের একেবারে খালিহাতে ফিরিয়ে দেন নাই। আমি পানি চেয়েছিলাম, তিনি বিদ্যুৎ দিয়েছেন। কিছুতো ফেলাম, খালি হাতে আসি নাই।’