আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণভবনে আলেমদের এক সমাবেশে স্বীকৃতির ঘোষণা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে স্বীকৃতি পাচ্ছেন দেশের কয়েক হাজার কওমি মাদ্রাসার লাখ লাখ শিক্ষার্থী।
কওমি মাদ্রাসার শীর্ষ আলেমদের সঙ্গে কথা বলা জানা গেছে, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের চেয়ারম্যান ও হেফাজত আমির আল্লামা আহমদ শফীর নেতৃত্বে তারা যাচ্ছেন গণভবনে। তিন শতাধিক আলেম ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
দেশের প্রবীণ আলেম আল্লামা আহমদ শফী ইতোমধ্যে ঢাকায় চলে এসেছেন। তার নেতৃত্বেই স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে কওমি মাদ্রাসার। তবে স্বীকৃতির কী ধরণ হবে, কোন কোন স্তর স্বীকৃতি পাবে এটা এখনো জানা যায়নি।
গণভবনের অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষ আলেমদের মধ্যে উপস্থিত থাকবেন মাওলানা আশরাফ আলী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাস, মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা আবদুল বাসিত বরকতপুরী, মাওলানা আবদুল হালিম বোখারি, মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ, মুফতি রুহুল আমীন, মাওলানা সুলতান যওক নদভী, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মাওলানা জোবায়ের আহমদ চৌধুরী, মাওলানা আযহার আলী আনোয়ার শাহ, মাওলানা মুসলেহুদ্দীন রাজু, মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ, মাওলানা নুরুল ইসলাম, মাওলানা মাহফুজুল হক, মুফতি আরশাদ রাহমানী, মুফতি মোহাম্মদ আলী, মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ প্রমুখ।
গত ২৮ মার্চ স্বীকৃতির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে বৈঠকে করে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর পাঁচ সদস্যের একটি লিয়াজোঁ কমিটি। সেই বৈঠকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা সনদ স্বীকৃতি দেয়া সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদিন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আব্দুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরের আগে সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। তিনি সোমবার দেশে ফিরবেন। এর পরদিনই তিনি বসছেন দেশের শীর্ষ আলেমদের সঙ্গে।
দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা কওমি সনদের স্বীকৃতি ঘোষণা করে শেখ হাসিনা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে মনে করছেন কওমি সংশ্লিষ্টরা। এর আগে বিএনপি জোট সরকারের শেষ সময়ে কওমি সনদের স্বীকৃতির মৌখিক ঘোষণা এলেও তা কার্যকর হয়নি।
২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়। ২০১৩ সালে কওমি সনদের স্বীকৃতি দিতে উদ্যোগ নেয় সরকার। ‘কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা আইন-২০১৩’ অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকেও ওঠে। তখন স্বীকৃতির বিরোধিতা করে হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন। পরে সরকার আলেমদের ঐক্যবদ্ধ করে স্বীকৃতি ঘোষণার উদ্যোগ নেয়।