বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে আলোচনার জন্য দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকেছেন। এরই মধ্যে কমিটির সব সদস্যকে বার্তা পাঠানো হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং এর সদস্য শায়রুল কবির খান ঢাকাটাইমসকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়েই রাত সাড়ে আটটায় এই বৈঠক হবে।
এই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হবে, সেটি নিশ্চিত না করে এ বিষয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন শায়রুল কবির খান।
যোগাযোগ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়েছেন, বেশ কিছু চুক্তি করেছেন আবার তিস্তা চুক্তি করতে পারেননি, এ নিয়েই তো আলোচনা হবে। আবার অন্য প্রসঙ্গও আসতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগে গত ৩ এপ্রিল বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক বসে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ভারত সফরে যদি সামরিক কোনো চুক্তি হয়, তাহলে বিএনপি কর্মসূচি দেবে।
গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী চার দিনের ভারত সফরে যান। শনিবার দেশটির সঙ্গে যেসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়, তার মধ্যে প্রতিরক্ষা বিষয়ক তিনটি সমঝোতাও রয়েছে।
‘বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা রূপরেখা’ সংক্রান্ত এই সমঝোতা স্মারক সই হয়। আরও সই হয় ‘কৌশলগত ও ব্যবহারিক শিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে’ ঢাকার মিরপুরের ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ ও ভারতের তামিলনাডু রাজ্যের ওয়েলিংটনে (নিলগিরি) ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজের মধ্যে সমঝোতা স্মারক।
‘জাতীয় নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও কৌশলগত শিক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে’ ঢাকার ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও নয়া দিল্লির ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সইয়ের কথাও জানিয়েছে দুই পক্ষে।
প্রতিরক্ষা খাতের এই তিন সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ও ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব সই করেন।
এ ছাড়া ভারতের কাছ থেকে লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় চার হাজার কোটি টাকা সমমানের ৫০ কোটি ডলার ঋণ পাবে বাংলাদেশ। এই টাকায় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনবে বাংলাদেশ।
এই চুক্তি হওয়ার পর পর বিএনপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করছে। খালেদা জিয়ার দাবি, ‘সরকার যা কিছু বাকি ছিল তার সবই ভারতের কাছে বেচে দিয়েছে।’
বিএনপি নেত্রী এও বলেন, ‘আজকে দেশ বিক্রি করে দিয়েছে। সেজন্য পাঁচ বছরের জন্য এটা একটা চুক্তি করেছে- পাঁচ বছর তাকে থাকতে দিতে হবে। এই চুক্তি তো তিনি সেজন্য করলেন। ওই পাঁচ বছর পরে উনারা বোধ হয় কাগজে-কলমে দেশটাকে লিখে দিয়ে মনে হয় বিদায় নেবে আর কি।’
বিএনপির গত ৩ এপ্রিলের বৈঠকের সিদ্ধান্ত আর দলের নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যের কথা জানিয়ে বিএনপি কোনো কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে কি না, জানতে চাইলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘রাতে মিটিং, সিদ্ধান্ত কী হয় তা তো এখনই বলা যাবে না।’