বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরে ভারতের সঙ্গে করা চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সইকে ‘সার্বভৌমত্ববিরোধী’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ‘দেশবিরোধী’ এসব চুক্তি জনগণ মেনে নেবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার দুপুরে নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে ফখরুল এসব কথা বলেন। সদর উপজেলার শুখানপুখুরী ডি-হাটে দলীয় তিন নেতার স্মরণে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন চার দিনের সফরে ভারতে আছেন। সফরের দ্বিতীয় দিনে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। প্রতিরক্ষা, ঋণ, মহাকাশ, পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হলেও বহুল আলোচিত তিস্তা চুক্তি নেই এর মধ্যে। এই সফরে তা হবে না বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে দুই দেশই আশাবাদী তিস্তা চুক্তিও অদূর ভবিষ্যতে সম্পাদিত হবে।

এসব চুক্তির সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘ এসব চুক্তর মাধ্যমে আমরা তিস্তার পানিও পাবো না, সীমান্তে হত্যাও বন্ধ হবে না। আমরা সব দেব কিন্তু কিছুই পাবো না এটা হতে পারে না।’

ভারতীয় নীতির সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘আমরা বাণিজ্য করতে গেলে ট্যারিফ দেয়, কর বসায়, চাপ সৃষ্টি করে।ওদের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতিও কমবে না অথচ আমরা সব দিয়ে দেব। আমরা ট্রানজিট দিয়ে দিয়েছি। পশ্চিম বাংলা থেকে ভারতের যে সাতটি রাজ্য আছে সেখানে সরাসরি যেতে পারবে। খুলনা থেকে কলকাতা যাওয়ার ট্রেন লাইন চালু হয়ে গেল। সমুদ্রপথে তারা আমাদের বন্দর ব্যবহার করে তাদের পূর্বের রাজ্যগুলোতে মালামাল নিতে পারবে। কিন্তু আমরা কী পেলাম?’

মির্জা ফখরুল প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তিস্তা নদীর পানিসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা এবং বাণিজ্য বাধা অপসারণ করা। এগুলোর সমাধান না হলে প্রতিরক্ষা চুক্তি বা সমঝোতা কোনোটাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।’

ফখরুল বলেন, ‘সরকার দাবি করে, এখন ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক উষ্ণতম পর্যায়ে আছে। তাহলে এই ধরনের চুক্তির কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে বলে বিএনপি মনে করে না।’

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘মিথ্যা মামলার রায় দিয়ে এ সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায়।’

আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে না পারলে তাদেরকেও জনগণ নির্বাচন করতে দেবে না।’

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৈমুর রহমানসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ফখরুল বিএনপির তিন নেতাকর্মীর কবর জিয়ারত করেন এবং পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে পুলিশের গুলিতে ওই তিন নেতাকর্মী মারা যান।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031