বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভারতের সঙ্গে সরকার যেসব চুক্তি করেছে তা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা বলে মন্তব্য করেছেন । ভারতে সই হওয়া চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের বিস্তারিত প্রকাশের আগেই এই প্রতিক্রিয়া জানান রিজভী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লিতে ২২ টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই করে দুই পক্ষ। এর মধ্যে আছে অবকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণচুক্তি, চার হাজার কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনতে ঋণ, ছয়টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, আরও সীমান্ত হাট চালু, বাংলাদেশে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রভৃতি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব শ্রীপ্রিয় রাঙ্গানাথানের বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলছে, প্রতিরক্ষা, ঋণ, মহাকাশ, পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়ে এসব চুক্তি হয়েছে।

চুক্তি সইয়ের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। তারা দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।

বহুল আলোচিত তিস্তা চুক্তি না হলেও এ বিষয়ে কাজ চলছে জানিয়ে মোদি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলেই এই চুক্তি হবে।

এসব চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের আগেই নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন বিএনপি নেতা রিজভী। তিনি বলেন, ‘জনগণকে পুরোপুরি অন্ধকারে রেখে প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্বাক্ষরসহ ২২টি চুক্তি করেছে বলে শুনতে পারলাম। প্রতিরক্ষা চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের নিরাপত্তাকে আরও বেশি উন্মোচিত এবং দুর্বল করল সরকার।’

রিজভী বলেন, ‘আমার যেসব বিষয়ে এতদিন প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছিলাম যে, ভেবেছিলাম খুব হীনভাবেও চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী সেই প্রতিরক্ষা চুক্তি করবেন না। কিন্তু গণমাধ্যম মারফত জানতে পারি ২২ টি চুক্তিসহ সমঝোতা স্বাক্ষর করা হয়েছে। অথচ জনগণকে জানানো হয়নি। এটা জনগণকে তাচ্ছিল্য করার শামিল। এসব চুক্তি দেশ ও জনবিরোধী। আমরা এসব চুক্তির নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

বিএনপি নেতা বলেন, ‘জনগণকে অন্ধকারে রেখে এসব চুক্তির উদ্দেশ্য হলো অনির্বাচিত শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতাকে পোক্ত করা।’

প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের আগে থেকেই বিএনপি সমালোচনায় মুখর ছিল। ভারতের সঙ্গে বিশেষ করে প্রতিরক্ষা বিষয়ে কোনো ধরনের চুক্তিতে যাওয়ার বিরোধী দলের নেতারা। আর তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি না হলে এই সফরের কোনো মানে হয় না বলেও মন্তব্য করেছেন একাধিক নেতা।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, ‘জনগণের বাঁচামরার প্রশ্ন তিস্তা চুক্তি নিয়ে কথা বলছে না সরকার। কারণ কথা বললে তো তাদের বন্ধুরা বিরক্ত হবে, মনঃক্ষুণ্ন হবে। এ জন্যই তারা তিস্তা নিয়ে কথা বলে না। অন্যদিকে তিনি আমাদের নিরাপত্তাকে আরও উন্মোচন করলো।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031