ভারত সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সপ্তাহে । ৭ বছরের মধ্যে এটা প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপক্ষীয় ভারত সফর। এ সফরে দু’দেশ যোগাযোগ, জ্বালানি ও বাণিজ্যসহ নানা খাতে বেশ কয়েকটি চুক্তির ঘোষণা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার তারিক করিম মনে করছেন মনোযোগ এখনও তিস্তা চুক্তিতেই। ঐতিহাসিক এই পানি বণ্টন চুক্তির সমাধা এখনও হয়নি। এর পেছন মূল কারণ পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে মতপার্থক্য। দ্য হিন্দুকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তারিক করিম বলেছেন, তিস্তা এখনও ভারত, বাংলাদেশের জন্য লিটমাস টেস্ট। অর্থাৎ দুদেশের সম্পর্কের জন্য সুনির্দিষ্ট ইঙ্গিতবাহী এক পরীক্ষা। তারিক করিমের ওই সাক্ষাৎকারের ঈষৎ সংক্ষেপিত অনুবাদ মানবজমিনের পাঠকদের জন্য এখানে তুলে ধরা হলো:
প্রশ্ন: প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ২০১০ সালে শেষবার যখন দ্বিপক্ষীয় সফরে দিল্লি এসেছিলেন তখন আপনি হাইকমিশনার ছিলেন। ৭ বছর পর আপনি এবারের সফর থেকে সম্ভাব্য কি ফল আসবে বলে মনে করেন?
উত্তর: আপনার মনে থাকবে, শেখ হাসিনা তার সর্বশেষ সফরটাও করেছিলেন নির্বাচিত হওয়ার পর একটা বছর পার করে। তখনও যখন আমাদের সফরের দিনক্ষণ ঠিক করার বিষয়ে বলা হয়েছিল, আমি বলেছিলাম- সফরটা তখনই করা যাক যখন উভয়পক্ষের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো কিছু বের হয়ে আসবে। ওই সফর আমাদের সম্পর্ককে নতুন করে সাজিয়েছিল। নতুন পথে স্থাপন করেছিল আমাদের মিত্রতা। সেটা ছিল একটা গেম চেঞ্জার। প্রধানমন্ত্রীদ্বয় তখন একটি রোডম্যাপ নিরূপণ  করেছিলেন। আর মনমোহন সিং ফিরতি সফর করার সময় নাগাদ ঘোষণাগুলোর অনেকগুলো নিয়ে কাজ শুরু হয়েছিল। ইউপিএ সরকার প্রণীত সমঝোতার অনেকগুলোর কাজ মোদি সরকার আসার আগ পর্যন্ত যে শুরু হয় নি সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ; কেননা তারা রাজনৈতিক ম্যান্ডেট হারিয়েছিল। কিন্তু ভিশনটা ছিল সবসময়। প্রধানমন্ত্রী মোদি এগুলো কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছেন। বিষয়গুলো এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছেন। ২০১৫ তে তার সফর ছিল স্বাভাবিক পরিণতি। আর আমরা যেহেতু সীমান্ত চুক্তি ও যোগাযোগ বিষয়ক চুক্তি অর্জন করতে পেরেছি; বাকি ছিল শুধু তিস্তা চুক্তি। আর তিনি দ্বিপক্ষীয় বন্ধনের ভবিষ্যৎ পথ নতুন করে নিরূপণ করেছেন।
প্রশ্ন: তিস্তা চুক্তি তারপরও কেন প্রস্তাব থেকে এড়িয়ে গেছে?
উত্তর: অতীতে, সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক একটা অবকাঠামো ছিল যেখানে প্রধানমন্ত্রীর [হাসিনার] উপদেষ্টা [গওহর রিজভী] মাসে একবার এসএসএ’র [শিবশঙ্কর মেনন] সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। তারা কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতেন। তারা ওই ব্যবস্থা চালিয়ে গেলে ভালো হতো। আমলাতন্ত্রকে তাদের ওপর ছেড়ে দিলে তার ওপর মনোযোগ বেশি দিন থাকে না। মনোযোগ সরিয়ে নেয়ার উপাদান ঢুকে পড়ে। এটাও মাথায় রাখা যাক যে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার দ্বিতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় অর্ধভাগে রয়েছেন। আর এটা বিশ্বের যে কোনো অঞ্চলের যে কোনো সরকারে যে কোনো নেতার জন্য সমস্যাযুক্ত। আপনি যদি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে যান, আমি যদিও শতাধিক চুক্তির কথা বলছি যার ৯০টির অধিক সম্পন্ন হয়েছে, পাইপলাইনে রয়েছে আরো ৫০টির বেশি, তারা শুধু এটাই জিজ্ঞাসা করবে, ‘তিস্তা কেন হয় নি?
প্রশ্ন: ২০১৪ সালের এক সাক্ষাৎকারে আপনি তিস্তাকে সম্পর্কের অন্যতম একটি লিটমাস টেস্ট বলেছিলেন। এটা কেন এরকম?
উত্তর: এটা আমাদের অতীতে থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত। আমরা তিস্তা অতিক্রম করতে পারলে, দুদেশের মধ্যে অভিন্ন ৫৪টি নদীর অববাহিকা ব্যবস্থাপনার বৃহত্তর লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হতে পারি। শেখ হাসিনা নদী ‘ভাগ’ বা বণ্টনের কথা না বলে এগুলো ব্যবস্থাপনার কথা বলেন। আপনি ভূ-ভাগ বিভাজন করতে পারেন কিন্তু আপনি কি পানি বা এর চারপাশের প্রাণিজগতের পরিবেশ ভাগ করতে পারবেন? আমরা নিজেদের উপনিবেশ-পরবর্তী নিও-ওয়েস্টফ্যালিয়ান নিয়মে জিম্মি করে ফেলেছি যার আবির্ভাব হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর। আমাদের জাতীয়তা রক্ষা নিয়ে আমরা অতি উৎসাহী উদ্বেগ পোষণ করি। এটা কখনও কখনও আমাদের সঠিক কাজটি করতে বাধা দেয় যা জাতি সীমান্তের ঊর্ধ্বে। তিস্তা এখন এমন একটি আবেগ সৃষ্টিকারী ইস্যু।
প্রশ্ন: এ পরিস্থিতি বিবেচনায়, তিস্তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রী হাসিনার ফিরে যাওয়াটা কতটা কঠিন হবে?
উত্তর: রাজনৈতিকভাবে এটা হবে অত্যন্ত কঠিন। অনেক কঠিন। তাকে আঘাত করতে বিরোধীপক্ষ এই একমাত্র তিস্তাকে ব্যবহার করে। তারা প্রশ্ন করে, প্রধানমন্ত্রী যদি ভারতের এত ভালো বন্ধুই হবেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে এত ভালো সম্পর্কই যদি থাকবে, তাহলে কেন তিনি এ চুক্তি করতে পারছেন না? কাজেই ৭ বছর পর যখন তিনি যাচ্ছেন তখন ফেরত নেয়ার মতো কিছু নিশ্চয়ই আছে। দেখুন, তিস্তা ইস্যুকে যদি সমীকরণ থেকে সরিয়ে ফেলা হয়, তাহলে ভারত ও বাংলাদেশের আর কোনো বিবাদ নেই। তিস্তা ২০১১ সালেই হতে পারতো, যেমনটা আমাদের সমঝোতা ছিল: নদীর যেন মৃত্যু না ঘটে তা নিশ্চিত করতে রোডম্যাপ। উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছিল যে আমাদের অবশ্যই নদীকে প্রবাহিত হতে দিতে হবে। ন্যূনতম স্তর বজায় রাখতে হবে এবং এর ওপরে যতটাই থাকুক না কেন তা সমভাগে বণ্টন করা হবে। এই বোঝাপড়া ছিল। শুধু বাকি ছিল স্বাক্ষর।
প্রশ্ন: তাহলে এটা নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে কেন সম্পন্ন হতে পারলো না?
উত্তর: এ জায়গাটাতে ভারতের ‘সহযোগিতামূলক কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থা’ নীতি চলে আসে। সেটা হলো, পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের ঐকমত্য ছাড়া নির্বাহী আদেশ দিয়ে আপনি এটা করতে পারবেন না। আমার প্রশ্ন হলো, ‘সহযোগিতামূলক কেন্দ্রীয় সরকারবাদের’ মন্ত্র যদি বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থকে খর্ব করতে পারে, তাহলে সমন্বয়মূলক সহ-আঞ্চলিকতাবাদের নীতি কেন সহযোগিতামূলক কেন্দ্রীয় সরকারবাদের ওপরে যেতে পারবে না? আপনাদের দিগন্তগুলো প্রসারিত করুন, কেননা তাহলে মুনাফা এত বিশাল হবে যে আপনার যাবতীয় উদ্বেগ ঢাকা পড়ে যাবে।
প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যকার ইস্যুগুলো আপাতত সমাধান হবার নয়- সেই আলোকে সামনে অগ্রসর হতে সরকারগুলোর জন্য আর কি কি পথ খোলা আছে?
উত্তর: এই সফরকে সামাল দেয়ার একটা উপায় হলো, শেখ হাসিনা আর কি কি নিয়ে যেতে পারবেন সে দিকে নজর দেয়া। বাংলাদেশে দুটো জিনিস চায়: পানি নিরাপত্তা ও জ্বালানি নিরাপত্তা। উদাহরণস্বরূপ, গঙ্গা বাঁধ প্রসঙ্গে ভারত যদি বলে যে তারা বাংলাদেশকে সহায়তা করবে, তাহলে সেটা ভালো কিছু হবে। গঙ্গা বাঁধ বরাবরই তাকে তুলে রাখা হয়েছে কারণ আমাদের পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না। আর সুনির্দিষ্ট পরিমাণ পানির প্রবাহ হবে তেমন নিশ্চয়তা দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত দাতারা এতে অর্থায়ন করবেন না। সেটা যেন হয় তা সে সময়ের রাজনৈতিক জোটগুলো নিশ্চিত করেছে। এ সফরে যদি গঙ্গা বাঁধ হয়, তাহলে শেখ হাসিনা ঢাকা ফিরে বলতে পারবেন এটা তার পিতার [শেখ মুজিবুর রহমান] স্বপ্ন ছিল। তিনি ফারাক্কা বাঁধ পেয়েছিলেন কিন্তু সবসময়ই গঙ্গা বাঁধ নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। কাজেই তিনি [হাসিনা] যদি বলতে পারেন, এটা হয়ে গেছে আর আমরা নদী অববাহিকা ব্যবস্থাপনা চুক্তির দিকে এগুতে পারি তাহলে গল্পের গতিপথ পাল্টাবে আরো ফলপ্রসূ সংশ্লিষ্টতার দিকে।
প্রশ্ন: আপনি অনেক বিকল্পের কথা বললেন। প্রধানমন্ত্রী হাসিনার উপদেষ্টা উজানের দেশ হিসেবে চীনকে আলোচনায় আনারও পরামর্শ দিয়েছিলেন। এটা কি রেড ফ্ল্যাগ নয়?
উত্তর: ভারত এটা মেনে নেবে না। সত্যি কথা বলতে, চীনও আমাদের কথা না শুনতে পারে। তবে তারা যেটাই করুক না কেন, নদীর তাদের অংশের দিকগুলোতে তারা যা কিছু নির্মাণ করে, তারপরও ভারত ও বাংলাদেশে ৭০ শতাংশ প্রবাহ হয়। কাজেই আমাদেরকে অবশ্যই নিজেদের মধ্যে কীভাবে আশার সঞ্চার করা যায় সেটা বিবেচনা করতে হবে। কেননা, বর্তমানে আমাদের পানিপ্রবাহের ৬০ শতাংশ সরাসরি সমুদ্রে চলে যায়। আমাদের পক্ষে যা সম্ভব সেটা আমাদের করা উচিত। প্রতিবন্ধকতাগুলো সরে যাওয়ার অপেক্ষা করা উচিত। হাজার হলেও, আমরা সার্ক নিয়ে সেটা করেছি যেখানে আমরা যোগাযোগ প্রশ্নে বিবিআইএন [বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল] সাব-গ্রুপ নিয়ে এগিয়ে যেতে সম্মত হয়েছি।
প্রশ্ন: এ সফরকালীন মনোযোগের বড় একটি জায়গা হলো যোগাযোগ (কানেক্টিভিটি)। ভারত ঋণের অঙ্ক বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। উভয়পক্ষ বেশ কয়েকটি রেলপথ, সড়কপথ নির্মাণের ঘোষণা দেবে। তারপরও বাংলাদেশে চীনের করা প্রতিশ্রুতির সঙ্গে একটা তুলনা রয়েছে। চীনের প্রতিশ্রুত অর্থের পরিমাণের দিক থেকে অপেক্ষাকৃত বড় আর এটা তাদের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অংশ। বাংলাদেশে চীনের প্রভাব নিয়ে কি ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত?
উত্তর: ভারত কেন কানেক্টিভিটি চায়? যেন দেশটি বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে সফর করতে পারে। বাংলাদেশে যে রাস্তাগুলো রয়েছে তারা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডপূর্ণ নয়। বৃটিশরা বেশ কয়েকটি রিভার চ্যানেল নির্মাণ করেছিল কিন্তু আমরা সেগুলো হারিয়েছি। তারা রেলপথ নির্মাণ করেছিল, কিন্তু সেগুলো বড় নদী পার করতে সক্ষম নয়। এখন, বিনিয়োগ ও আধুনিক প্রযুক্তির বদৌলতে আমাদের যমুনা সেতু [জাপানি অর্থায়নে ১৯৯৮ সালে কোরিয়ান এক প্রতিষ্ঠান নির্মিত] হয়েছে। আমরা পদ্মা সেতু [নির্মাণের কাজ করছে চীনা একটি প্রতিষ্ঠান] পেতে চলেছি। এসব কিছু নির্মাণের জন্য আমাদের বিনিয়োগ প্রয়োজন। ভারতের সুউচ্চ চিন্তা-ভাবনা আর লক্ষ্য আছে, তবে সবসময় তার সঙ্গে তাল মেলানোর অর্থ নেই। বাংলাদেশ জিডিপি প্রশ্নে অনেক ওপরে উঠতে চায়। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা সাতটি এসইজেড নির্মাণ করতে চান। সড়ক আর বিদ্যুৎ ছাড়া আমাদের সেগুলো অর্জন করতে পারবো না। এই সফরে আপনি এটাও দেখতে পারেন যে বিদ্যুৎ দেয়ার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করবে ভুটান ও ভারত। আমরা দেশমধ্যবর্তী পানিপথগুলো সহ-আঞ্চলিকভাবে নির্মাণে কাজ করতে পারি। চীন যদি বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করতে আসছে, তাহলে ভারতে আমাদের বন্ধুরাও ওই একই রাস্তা ব্যবহার করে পূর্বে সফর করতে পারবে। বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য চীনেরও ভারতীয় রাস্তা [উত্তরপূর্ব দিক দিয়ে] ব্যবহারের প্রয়োজন রয়েছে। কাজেই আমি মনে করি না এসব উদ্বেগের কোনো যথার্থতা আছে।
প্রশ্ন: ভারত যেভাবে চীনা ঝুঁকিকে বড় করে দেখছে, বাংলাদেশও কি ভারত ঝুঁকিকে বড় করে দেখে না? সফরের আগ দিয়ে ভারত একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি সমঝোতায় আগ্রহ দেখিয়ে আসছে, কিন্তু বাংলাদেশে এর বিরোধিতার অর্থ হলো আপাতত এটা হবে একটি সমঝোতা স্মারক কর্মকর্তারা এমনটাই বলছেন। এই দ্বিধা কেন?
উত্তর: মানসিকতা ভেঙেচুরে ফেলা কঠিন। বাস্তিল দেয়াল ভেঙে ফেলাটা মানুষের জন্য সহজ কিন্তু আমাদের মনের বাস্তিল চূর্ণবিচূর্ণ করা কঠিন। আমাদেরকে এই লেগ্যাসি অতিক্রম করতে হবে। ১৯৭৮ সালে জেনারেল জিয়াউর রহমান চীনের সঙ্গে সহযোগিতার চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। আর সেটা সামরিক অঙ্গনে প্রভাবশালী অংশীদার হওয়ার সুযোগ দিয়েছে চীনকে। শেখ হাসিনাও উপলব্ধি করেন যে এই জায়গাতে সাবধানে হাঁটতে হবে তার। বর্তমানে [ভারত-বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা] প্রাতিষ্ঠানিক নয়, তবে আমাদের মধ্যে অনেক বিনিময় রয়েছে। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠককে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছি যেন আমরা আমাদের সীমান্ত ব্যবস্থাপনা আরো ভালোভাবে করতে পারি। আমি আশা করি আমরা প্রতিরক্ষা খাতেও এগিয়ে যেতে পারবো। হয়তো সমঝোতা স্মারক দিয়ে সূত্রপাত হতে পারে। আপনি যদি খুব তাড়াহুড়ো করেন, তাহলে পাল্টা প্রতিক্রিয়া আসতে পারে। আপনাকে রাজনৈতিক অভিমতকে কাঠামোতে আনতে হবে। এবং চীনের ওপর অতিনির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে এবং বাংলাদেশের জন্য অপশনগুলোতে বৈচিত্র্য আনতে শেখ হাসিনাকে সুযোগ দিতে হবে। তবে প্রতিরক্ষা সহযোহিতাকে এই সফরের মনোযোগ বানানো উচিত হবে না।
প্রশ্ন: কিন্তু, এই মানসিকতা আসলে কেন? উদাহরণস্বরূপ মার্চ মাসে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি সভায় কথা বলেছিলেন। তিনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় হস্তক্ষেপের অভিযোগ তোলেন; যেখানে তিনি হেরেছিলেন। এই ধারণা কেন বিদ্যমান?
উত্তর: এটা রাজনীতি, খুবই সহজ কথা। আর রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকা। শেখ হাসিনা বিরোধীদের [বিএনপি] বলছেন যে তিনি ভারতের প্রতি পক্ষপাতমূলক নন। এবং তিনি দৃঢ়ভাবে ভারতকে বলতে সক্ষম যে তারা (২০০১ সালে) যা করেছিল তা ভুল।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031