ট্রাইব্যুনাল রাজধানীর হাতিরপুলে এক তরুণীকে ২৬ টুকরা করে হত্যার ঘটনায় সাইদুজ্জামান বাচ্চুর ফাঁসির আদেশ দিয়েছে ।

হত্যাকাণ্ডের চার বছর পর বুধবার ঢাকার তিন নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি বাচ্চু আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। জামিন নেয়ার পর থেকে তিনি নিখোঁজ আছেন।

২০১২ সালের ৩১ মে হাতিরপুলের নাহার প্লাজার ১৩ তলায় সোনালী রিক্রুটিং এজেন্সি অফিসে রুমি ওরফে সুস্মিতা নামে ওই তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এরপর লাশ ২৬ টুকরা করে ওই প্রতিষ্ঠান ও পাশের বিল্ডিংয়ের ছাদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রাখা হয়। আর নাড়িভূঁড়িসহ বাকি অংশ ফেলা হয় টয়লেটের কমোডে।

ঘটনার দুইদিন পর ২ জুন পুলিশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মরদেহের অংশগুলো উদ্ধার করে নিয়ে আসে এবং এজেন্সির মালিক সাইদুজ্জামান বাচ্চুকে গ্রেপ্তার করে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক আব্দুস সামাদ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন।

ওই বছরের ৫ জুন মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাতজন সাক্ষী বাচ্চুকে দোষারোপ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর দুইদিন পর বাচ্চুও ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে বাচ্চু ভিকটিম রুমিকে কেন এবং কিভাবে হত্যা করেছেন তার বিস্তারিত বর্ণনাও দেন।

স্বীকারোক্তিতে বাচ্চু বলেছিলেন, ধর্ষণের পর ধরা পড়ার ভয়েই তিনি মেয়েটিকে খুন করে। এরপর খুনের আলামত গোপন করতে সারারাত ধরে মরদেহ টুকরা টুকরা করে তিনি। মানুষ যেন বুঝতে না পারে এজন্য দেহের হাড় থেকে মাংস আলদা করে সেগুলো পাশের বিল্ডিংয়ের ছাদ ও রাস্তায় ফেলে দেন। নাড়িভূড়িগুলো বাথরুমে কমোডে ফেলে ফ্লাশ করে দেয়।’

জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, “দুই বছর আগে রুমির সঙ্গে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়েছিল তার। ঘটনার ১০/১২দিন আগে রুমি মিরপুরে তার খালার বাসায় বেড়াতে আসে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রুমিকে তার অফিস সোনালী রিক্রুটিং এজেন্সিতে নিয়ে ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করেন।

২০১৩ সালের ২০ মে ঢাকার তৃতীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এসএম রেজানুর রহমান মামলার একমাত্র আসামি সাইদুজ্জামান বাচ্চুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান।

দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল আজ এই রায় দেন।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031