আজ শেষ হচ্ছে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) ১৩৬তম সম্মেলন স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপ বন্ধসহ গুরুত্বপূর্ণ ১৮ দফা খসড়ার প্রস্তাব ও পারস্পরিক সহায়তার আশ্বাসের মধ্য দিয়ে । বিশ্বের ১৩২টি দেশের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে পাঁচদিন ব্যাপী এই সম্মেলন শুরু হয়েছিল গত শনিবার।
১ এপ্রিল সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য আইপিইউ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। ১৩৮ বছরের ইতিহাসে সংস্থাটি এবারই প্রথমবারের মতো কোনো পরিবেশবান্ধব সম্মেলনের আয়োজন করছে।
অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ বন্ধসহ গুরত্বপূর্ণ প্রস্তাব
স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপ বন্ধসহ ১৮ দফা খসড়া প্রস্তাব পাস হয় আইপিইউ’র শান্তি ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক স্টান্ডিং কমিটিতে। মঙ্গলবার ভোটাভোটির পর ৪৪-১০ ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়। সম্মেলনের শেষ দিনে এটি গৃহীত হওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ ৪৪টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। অপরদিকে জার্মানি, সুইডেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক, কানাডা, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, ইউক্রেইন, ফিনল্যান্ড ও আইসল্যান্ড বিপক্ষে ভোট দেয়। বেলজিয়াম ভোটদানে বিরত ছিল।
এখন প্রস্তাবটি আইপিইউ’র নির্বাহী কমিটিতে যাবে। ১৭ সদস্যের ওই কমিটিতে প্রস্তাবটি চূড়ান্ত হবে। আজ প্রস্তাবটি জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে চূড়ান্ত আকারে গৃহীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এছাড়া সম্মেলনে গতকাল তীব্র খরায় ইয়েমেন, দক্ষিণ সুদান, সোমালিয়া ও উত্তর কেনিয়ার দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের সাহায্যে দ্রুত এগিয়ে আসার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। ঢাকায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ সংসদীয় ফোরামের চলমান সম্মেলনে গতকাল এ বিষয়ে একটি জরুরি প্রস্তাব পাস হয়।
এর আগে গত রবিবার সম্মেলনের সাধারণ আলোচনায় প্রস্তাবটি ভোটে গ্রহণ করা হয়। সোমবার এর ওপর আলোচনা হয়। বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য ও কেনিয়ার প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে প্রস্তাবটি আইপিইউ অধিবেশনে তোলা হয়।
‘সমাজের বৈষম্য নিরসনের মাধ্যমে সবার মর্যাদা ও মঙ্গল সাধন’ এই প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে গত শনিবার বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ও আইপিইউর যৌথ উদ্যোগে শুরু হয় ১৩৬তম এই সম্মেলন।
১৮৮৯ সালে যাত্রার ১২৮ বছর পর এবারই প্রথম এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশে। আয়োজক দেশ হওয়ায় এবারের সম্মেলন বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এর গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।