গতকাল রবিবার সকালে বিজিবি সদর দপ্তর পিলখানায় এ সম্মেলন শুরু হয়। ছয় দিনের সম্মেলন।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মিয়ানমারের নাগরিকরা (রোহিঙ্গা) বাংলাদেশে এসে কী সমস্যার সৃষ্টি করছে তা তুলে ধরা হয় সম্মেলনে। জানানো হয়, তাদের কারণে বাংলাদেশে বিরূপ সামাজিক প্রভাব পড়ছে।রোহিঙ্গারা যদি দেশে ফিরে বিচার চায় তাহলে তারা উন্মুক্ত আদালতে বিচার পাবে। তাদের অনেকে দেশে ফিরতেও শুরু করেছে। তাদের ফেরায় বাধা দেওয়া হচ্ছে না। যারা ফিরে যাচ্ছে তাদের জন্য নতুন গ্রাম করে দেওয়া হচ্ছে। মিয়ানমার পুলিশ ফোর্সের (এমপিএফ) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন। বিজিবি ও এমপিএফের সীমান্ত সম্মেলনে তাঁরা এ কথা জানান। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাড়ছে। উজার হচ্ছে বন। মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল এসব স্বীকার করে জানায়, তাদের দেশে একটি সমস্যা হয়েছিল। সে কারণে তাদের লোকজন সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছিল। তারা দাবি করে, চলে আসা লোকদের অনেকেই ফিরে যাচ্ছে মিয়ানমারে। তাদের জন্য মিয়ানমার সরকার নতুন গ্রাম বানাচ্ছে। সেখানে তারা নির্ভয়ে থাকতে পারবে।মিয়ানমার পক্ষ আরো জানায়, দেশে ফিরে যদি তারা (রোহিঙ্গারা) কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তাহলে উন্মুক্ত আদালতে (ওপেন কোর্ট) অভিযুক্তদের বিচার হবে। তারা হামলার শিকার হয়ে থাকলে ওপেন কোর্টে বিচার পাবে। মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশে এসে সমস্যা তৈরি করার জন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করে।বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মিয়ানমার থেকে ভয়ংকর মাদক ইয়াবা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এর কারণে যুবসমাজ ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। বিজিবির তরফ থেকে মিয়ানমারকে ১৪টি কারখানার ঠিকানা দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো বন্ধ করলে বাংলাদেশ উপকৃত হতো।উত্তরে মিয়ানমার পক্ষ জানায়, তারাও ইয়াবার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। এ পর্যন্ত ৫০ লাখ ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের পাঠানো তালিকা অনুযায়ী কারখানাগুলো পাওয়া যায়নি।উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সরকারি বাহিনীর হামলার কারণে হাজার হাজার রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে চলে আসে। এরপর থেকে উভয় পক্ষ যোগাযোগ করে এ সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছে। ওই ঘটনার পর এই প্রথম দুই দেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তারা সীমান্ত সম্মেলনে বসলেন। এটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। এরপর বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্রা সীমান্ত সম্মেলনে যোগ দিতে মিয়ানমার যাবে বলে জানা গেছে
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোহসিন রেজা জানান, মিয়ানমারের চিফ অব পুলিশ জেনারেল স্টাফ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মায়ো শোয়ে উইনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল সীমান্ত সম্মেলনে যোগ দিয়েছে। বাংলাদেশের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আনিছুর রহমান। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বিজিবির কর্মকর্তারা ছাড়াও স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সার্ভে অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা রয়েছেন। তিনি জনান, ৬ এপ্রিল সম্মেলনের যৌথ দলিল স্বাক্ষরিত হবে। মিয়ানমার প্রতিনিধিদল সেদিন রাতে দেশের উদ্দেশে রওনা হবে।