বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কুমিল্লা সিটি নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতার ঘাটতি ছিল বলে মন্তব্য করেছেন।
শুক্রবার রাজধানীতে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ কথা বলেন।
গতকাল কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরুর সাড়ে তিন ঘণ্টা পর সংবাদ সম্মেলন করে রিজভী কেন্দ্র দখল করে আওয়ামী লীগ প্রা্র্থীর পক্ষে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগ তোলেন। ধানের শীষের প্রার্থী সাক্কুও একই অভিযোগ করেন। ভোটগ্রহণ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা জানান নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে জানালেও বিকালে আরেক ব্রিফিংয়ে রিজভী বলেন, কুমিল্লা নির্বাচনে অধিকাংশ কেন্দ্রে ক্ষমতাসীনদের ‘সন্ত্রাস-অনিয়ম’ রোধে নির্বাচন কমিশন কার্যকর উদ্যোগ রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
আজকের সংবাদ ব্রিফিংয়ে রিজভী বলেন, ‘বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার যতোই সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলুন না কেন, তিনি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে ভোটগ্রহণের আগ মুহুর্তে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক উদবাতুল বারী আবু, সদস্য সাবেক কাউন্সিলর ও বর্তমান ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সাইফুল বিন জলিলসহ ৩৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। যাতে এসব নেতাকর্মী কোনো কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন না করতে পারে এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা কেন্দ্র দখল করতে পারে।’
রিজভী বলেন,‘ভোট শুরুর দুদিন আগ থেকে নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের ক্যাডার ও পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মী ও ভোটারদের বিভিন্নভাবে হয়রারি করে। নির্বাচনের আগের দিন রাতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে পুলিশ তল্লাশির নামে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। ভোটের আগের দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচনী এলকায় ঘুরে ঘুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধানের শীষের এজেন্ট না হতে চাপ প্রযোগ করা হয়। এমনকি মামলা-হামলা ও নির্যাতনের ভয় দেখানো হয়। এতো কিছুর পরও কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী সাক্কু বিজয়ী হয়েছেন।’
অনেক কেন্দ্রে ধীরগতিতে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে এমন অভিযোগ করে বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘অনেক কেন্দ্রে ভোটগ্রহণে ধীরগতি অবলম্বন করে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনী কর্মকর্তারা। বাহিরে লম্বা লাইন থাকলেও ভোট কাস্টিং যাতে কম হয় সেজন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়।’
‘কুমিল্লা নির্বাচন প্রমাণ করে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের ব্যাপারে কথা বলেন রিজভী। বলেন, ‘ককটেল, বোমা ফাটিয়ে ভোট কেন্দ্রে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা, কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দেয়া, ব্যালট ছিনতাই করা, ভোটকেন্দ্রে আসতে ভোটারদের বাধা দেয়াসহ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসারের অসহায়ত্বই হলো আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনের নমুনা।