সরকার নগর পরিবহনে সংরক্ষিত নারী আসনে যে পুরুষরা বসে থাকেন, তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে যাচ্ছে। সড়ক পরিবহন আইনের খসড়ায় বলা আছে, কেউ যদি এমনটি করেন তাহলে তার কারাদণ্ডের পাশাপাশি হবে জরিমানাও।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনটির খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয় সরকার। এতে নানা বিষয়ের পাশাপাশি বাসে সংরক্ষিত নারী আসনের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।
নগর পরিবহনে বড় বাসে নয়টি এবং ছোট বাসে ছয়টি আসন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু প্রায়ই এসব আসনে বসে থাকে পুরুষ যাত্রীরা। এ নিয়ে বাদানুবাদও হয় মাঝেমধ্যে। পুরুষ যাত্রীরা উঠতে চায় না, সংরক্ষিত আসন নিয়ে আবার কটাক্ষকর মন্তব্যও করেন কখনও কখনও। এ নিয়ে নারী যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। এই অবস্থায় সংরক্ষিত নারী আসন দখল করে রাখার বিষয়টিকে শাস্তির আওতায় আনতে যাচ্ছে সরকার।
আইনের খড়সায় বলা হয়েছে, সংরক্ষিত নারী আসনে বসতে না দিয়ে কেউ ওই আসনে বসলে এক মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন তিনি।
সরকারের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন নারী অধিকার কর্মী ও যাত্রীরা। আইনটি দ্রুত পাস করে তা কার্যকরের দাবিও জানান তারা। সেই সঙ্গে এখন নারীদের যাতায়াত বেড়েছে জানিয়ে সংরক্ষিত আসন বাড়ানোরও দাবি জানান তারা।
বেসরকারি সংগঠন নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশি কবির ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘নারীরা সব সময়ই এ বিষয়ে অভিযোগ করছে। বাসে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন থাকলেও এর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা বসতে পারতো না। এই সংরক্ষিত আসনে বসা যে অপরাধ সেটা এখন আইনের পরিণত করার জন্য সরকারে কাছে আমরা বারবার অনুরোধ করেছি। সর্বশেষ সরকার এখন যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটাকে আমরা স্বাগত জানাই। এটা কাগজে কলমে না হয়ে এ আইন যেন বাস্তবায়ন করা হয় সেই বিষয়েও সরকারকে তদারকি করতে হবে।’
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী কানিজ শাওন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বাসে নারীদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা আছে ঠিকই। কিন্তু বেশিরভাগ সময় দেখা যায় পুরুষরা এ আসনে বসে থাকেন। তাদের উঠতে বলা হলেও তারা উঠেন না। উল্টো তারা আমাদের কটু কথা বলেন। আবার আমরা যখন সাধারণ আসনে বসি তখন তারা বলেন, আবার সাধারণ আসনে বসলে অনেকে বলেন, এখানে বসেছেন কেন? মহিলা আসনে গিয়ে বসেন। এখন সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছেন আমরা তাতে স্বাগত জানাই।’
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজিদা সুলতানা বলেন, ‘ক্লাস করতে প্রতিদিনই উত্তরা থেকে বনানী আসতে হয়। বাসে উঠতে পারলেও সিট পাওয়া যায় না। আবার আমাদের জন্য যে সকল আসন সংরক্ষিত রাখা হয়েছে সেগুলোতেও বসা যায় না। উঠতে বললে জবাব আসে, সিট নাই দেখেই তো বাসে উঠেছেন, এখন বসতে চাইছেন কেন? উঠতে চায় না, বরং বলে পাবলিক বাসে সমস্যা হলে প্রাইভেট গাড়িতে যাওয়া-আসা করেন।’