এখনো অভিযান চলছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহলে । সোমবার সকালে এ এলাকার মানুষের ঘুম ভেঙেছে গোলাগুলি আর বিস্ফোরণের শব্দে।
স্থানীয়রা জানান, সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে সাতটা পর্যন্ত একটানা গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সাতটা থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত থেমে থেমে গুলি চলেছে। এরপর সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত আর কোনো শব্দ শোনা যায়নি। রবিবার রাতেও থেমে থেমে গুলি চলেছে। গোলাগুলি আর বিস্ফোরণের শব্দে সকালে তাদের ঘুম ভেঙেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কয়েকজন।
রবিবার সেনা অভিযান চলাকালে বাড়ির ভেতরে থাকা জঙ্গিদের মধ্যে দুজন নিহত হয়েছে। সেনাবাহিনী বলেছে, ওই জঙ্গি আস্তানায় আরও এক বা একাধিক জঙ্গি থাকতে পারে। জঙ্গিরা এতই দক্ষ যে সেনাবাহিনীর ছুড়ে দেওয়া গ্রেনেড কুড়িয়ে নিয়ে পাল্টা সেনাবাহিনীর দিকেই ছুড়ে দিচ্ছে। পাঁচতলা বাড়িটির ভেতরে প্রচুর বোমা-বারুদ (আইইডি) পেতে রাখা হয়েছে। এতে পুরো ভবনটি বিস্ফোরণোন্মুখ হয়ে আছে। এ কারণে ধীর গতিতে অভিযান চালাতে হচ্ছে।
সিলেটে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানা ঘিরে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলাকালে শনিবার সন্ধ্যা ও রাতে দু দফা বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে।
বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হয়েছেন র্যাব, পুলিশ, সাংবাদিকসহ অনেকেই। গুরুতর আহত র্যাবের দুজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আনা হয়েছে।
গুলশান হামলার পর বেশ কয়েক মাস টানা অভিযানে জঙ্গি তৎপরতা স্তিমিত হয়ে পড়েছিল। তবে সম্প্রতি গাজীপুরে জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানকে প্রিজন ভ্যান থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার মধ্য দিয়ে আবার প্রকাশ্য তৎপরতা দেখা যায় তাদের।
এরপর চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সীতাকুণ্ডে অভিযানের মধ্যে গত সপ্তাহে ঢাকায় র্যাবের ব্যারাকে আত্মঘাতী হামলা চালান এক জঙ্গি। এরপর সিলেটে অভিযানের মধ্যে শাহজালাল বিমানবন্দর পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণে নিহত হন আরেকজন।
ওই দুটি ঘটনার পর সিলেটে অভিযানের মধ্যে বোমার হামলার দায় স্বীকার করে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের নামে বার্তা এসেছে ইন্টারনেটে।
তবে আগের মতোই সরকারের পক্ষ থেকে তা নাকচ করে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে আইএসের কোনো তৎপরতা নেই। দেশীয় জঙ্গিরাই এসব হামলায় জড়িত।