সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বাংলাদেশে ভারতীয় তিনটি টিভি চ্যানেলে স্টার জলসা, স্টার প্লাস ও জি বাংলা সম্প্রচার বন্ধে রিট খারিজ করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন । বুধবার চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন হাইকোর্টের রায় স্থগিত আবেদনে ‘নো অর্ডার’ বলে আদেশ দেন। ফলে ভারতীয় এই তিনটি টিভি চ্যানেলের সম্প্রচারে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
২০ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় চ্যানেল বন্ধে রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়। আবেদনকারীর আইনজীবী একলাস উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। সোমবার চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদালতে এ আবেদনের শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করেন বিবাদীপক্ষ। আদালত সে আবেদন মঞ্জুর করেন।
২৯ জানুয়ারি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ভারতীয় চ্যানেল বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট খারিজ করে দেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, ডিজিটাইজেশনের এই যুগে বাস্তবতা নিয়ে চোখ বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। তবে এমন কোনও অনুষ্ঠান দেখানো ঠিক নয়, যা আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে ব্যাহত করে। এক্ষেত্রে কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আইন-২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী একটি কমিটি করার বিধান রয়েছে। যেই কমিটির দায়িত্ব টেলিভিশন অনুষ্ঠানসমূহ মনিটরিং করা।
৮ জানুয়ারি থেকে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া। স্টার জলসা ও স্টার প্লাসের বাংলাদেশের পরিবেশনকারী প্রতিষ্ঠান ডিজি জাদু ব্রডব্যান্ড লিমিটেডের পক্ষে আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু এবং জি বাংলার বাংলাদেশের পরিবেশনকারী প্রতিষ্ঠান ন্যাশন ওয়াইড মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সামসুল হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের জুলাইয়ে স্টার জলসার একটি সিরিয়ালের একটি চরিত্রের নামে পোশাক কিনতে না পেরে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ওই বছরের আগস্টে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন আইনজীবী সৈয়দা শাহীন আরা লাইলী। তখন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ উত্থাপিত হয়নি মর্মে আবেদনটি খারিজ করে দেন।
এরপর আবার নতুন করে রিট আবেদন করা হয়। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে একই সালের ১৯ অক্টোবর রুল জারি করেন হাইকোর্ট।